জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের প্রতিটি পর্যায়ের নির্বাচনে আলাদা আলাদা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
Published : 16 Jul 2014, 02:16 PM
মঙ্গলবার কমিশন সভায় সব নির্বাচনের জন্য দুই শতাধিক প্রতীক পর্যালোচনা করে তা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ইসির উপ সচিব মুহাম্মদ আবদুল অদুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে আলাদা আলাদা প্রতীক সংরক্ষণ, সমান ভোটপ্রাপ্তদের মধ্যে বিজয়ী নির্ধারণে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট এবং ব্যালটে একই প্রতীকে একাধিক সিল পড়লেও তা বাতিল না করার বিষয়ে কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বিষয়গুলো গুছিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে তা জারি করবে ইসি। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরো কিছুদিন লাগবে বলে উপ সচিব জানান।
বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৪০টি প্রতীক সংরক্ষিত রেখেছে ইসি। এসব প্রতীক থেকে নিবন্ধিত দল, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও স্থানীয় সরকারের ভোটের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর পর এ পর্যন্ত ৪০টি রাজনৈতিক দল প্রতীকসহ নিবন্ধিত রয়েছে। এছাড়া ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত রয়েছে জামায়াতের।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সংরক্ষিত ১৪০ প্রতীক থেকে নিবন্ধিত দলের ৪০টি প্রতীকসহ মোট ৬৫টি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের প্রতীক ছাড়া আরো ২৫টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রতিটি স্তরের জন্য আলাদা প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এখন জাতীয় সংসদে ৬৫ টি, উপজেলায় ৪৬টি, সিটি, পৌর ও ইউপিতে ৩৪টি করে প্রতীক সংরক্ষণের প্রস্তাব রয়েছে বলে আবদুল অদুদ জানান।
সংসদে প্রতীক কমছে
এতোদিন বরাদ্দ থাকা ১৪০ প্রতীক থেকে কমিয়ে সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৫ প্রতীক স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিচ্ছে ইসি। নিবন্ধিত দলের ৪০টি প্রতীক ছাড়া বাকি ২৫টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ব্যবহার করতে পারবেন।
সিটি করপোরেশনে মেয়র পদের জন্য ১২টি, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ১০টি এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ১২টি প্রতীক চূড়ান্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য ১৪টি, ভাইস চেয়ারম্যান ১২টি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ১০টি এবং উপজেলায় সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য রাখা হচ্ছে ১০টি প্রতীক।
পৌরসভার মেয়র পদের জন্য ১২টি, সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০ এবং সাধারণ সদস্য পদের জন্য ১২ প্রতীক চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য ১২টি, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের জন্য ১০টি এবং সাধারণ সদস্য পদের জন্য থাকছে ১২টি প্রতীক।
এর বাইরে আরো ৩০টি প্রতীক সংরক্ষিত রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।
আবদুল অদুদ বলেন, “সংসদে নিবন্ধিত দল বাড়লে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি হলে ইসি প্রয়োজনে যে কোনো সময় প্রতীক বরাদ্দ দিতে পারবে। এ জন্যে বিধি সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে না। সব বিবেচনায় নিয়ে প্রতীক সংখ্যা চূড়ান্ত করা হবে।”
কমিশন বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালায় সমান ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষণা করার যে বিধান ছিল সেটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে এখন থেকে পুনঃভোট হবে।
এছাড়া ব্যালটে একাধিক প্রতীকে ভোট পড়লে ওই ব্যালট পেপার বাতিল হবে। তবে একই প্রতীকে একাধিক সিল পড়লে তা বাতিল না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।