এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমকে তাদের মেয়েই হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
Published : 24 Aug 2013, 06:29 PM
নিহত পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশী রহমানকে হেফাজতে নিয়ে পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্মকমিশনার মনিরুল ইসলাম।
গত ১৮ অগাস্ট ঐশী ধরা দেয়ার পরও গোয়েন্দা পুলিশ একই দাবি করেছিল। তবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন নিহত মাহফুজের ছোট ভাই মশিউর রহমান রুবেল।
এই হত্যাকাণ্ডের মামলার বাদী রুবেলের ধারণা, তার ভাই ও ভাবি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে অন্য কোনো ‘রহস্য’ রয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, গত ১৪ অগাস্ট রাতে বাবা-মাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ঐশী।
স্বপ্নাকে হত্যার সময় ছোট ভাই দেখে ফেললে তাকে ঐশী বাথরুমে আটকে রাখে বলে মনিরুল জানান।
ভয় দেখিয়ে ঐশী গৃহকর্মী খাদিজা খাতুন সুমিকে সহায়তা করতে বাধ্য করে বলেও জানান তিনি।
এই হত্যাকাণ্ডে আর কেউ ঐশীকে সহযোগিতা করেছে কি না, তা পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
জিজ্ঞাসাবাদের পর ঐশীকে কারাগারে পাঠিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করে গোয়েন্দা পুলিশ।
আদালতের আদেশে ঐশীকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। ঐশীর সঙ্গে তাদের শিশু গৃহকর্মী খাদিজা খাতুন সুমীকেও সেখানে পাঠানো হয়েছে।
তার আগে এই দুজনই হাকিমের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তবে রিমান্ডে থাকা ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী ঐশী বৃহস্পতিবার সকালে তার সাত বছর বয়সী ছোট ভাই ও গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
পরদিন ছোটভাইকে প্রতিবেশীর বাড়িতে ফেরত পাঠালেও ফেরেনি ঐশী। শনিবার নিজেই পল্টন থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেয় এই কিশোরী।
এরপর গৃহকর্মী সুমী ও ঐশীর বন্ধু রনিকে আটক করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের পর খোয়া যাওয়া কিছু গহনাও ঐশীর কাছে পাওয়া গেছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল আগেই জানিয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, ‘উচ্ছৃঙ্খলতায়’ বাধা দেয়ায় বাবা-মার প্রতি ক্ষোভ ছিল ঐশীর।
ময়না তদন্তে দেখা গেছে, নিহত পুলিশ কর্মকর্তার দেহে ছুরিকাঘাতের দুটি এবং তার স্ত্রীর দেহে ১১টি চিহ্ন রয়েছে।
আটক ঐশীকে রিমান্ডে পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বয়স প্রমাণের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে পুলিশ। তার প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি।
ঐশীর স্কুলের রেকর্ড অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছরের কম। এই বয়সের কাউকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড শিশু অধিকারের লঙ্ঘন বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
ঐশীর পাশাপাশি শিশু গৃহকর্মীকে সুমিকে রিমান্ডে নেয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।