বেতন কাঠামোয় ‘অসঙ্গতিসহ’ বিভিন্ন দাবি নিয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আট মাসে কয়েক দফা চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পাননি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারা।
Published : 12 Jan 2016, 06:16 PM
শিক্ষকদের সঙ্গে বসলেন শিক্ষামন্ত্রী
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দ্বিতীয় দিনে
আমরা ভেসে আসি নাই: শিক্ষক সমিতি নেতা ফরিদ
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের পাঠানো চিঠি ‘আমলাদের বলয়’ ভেঙে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত আট মাসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আমরা অন্তত ছয় বার চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সাড়া পাইনি।”
কী কারণে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কোনো জবাব আসেনি সে বিষয়টি ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি।
তিনি বলেন, “একটি মহল প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষকদের বক্তব্যগুলো খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করেছে। আমরা মাত্র পাঁচ মিনিট সময় পেলেও তাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে পারতাম।”
চিঠির জবাব না আসার বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ স্পষ্ট কিছু না বললেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের অভিযোগ, ‘আমলাদের বলয় ভেদ' করে তাদের চিঠি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জানতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযাগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি; এসএমএস পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রায় নয় মাস আগে অষ্টম বেতন কাঠামোর প্রস্তাবে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল এবং গ্রেডে মর্যাদার অবনমনের খবর গণমাধ্যমে এলে 'উদ্বেগ' প্রকাশ করেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এরপর থেকে ওই বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে তার সাক্ষাৎ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা।
এর মধ্যে একটি চিঠি পাঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ প্রার্থনার কথা বলা হয়।
গত ৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গৃহীত ওই চিঠির অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।
বাকি চিঠিগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয় বলে শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন জানান। সর্বশেষ গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চিঠি পাঠায় বলে তিনি জানান।
অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “সৌজন্য সাক্ষাতে বেতন কাঠামোতে আমাদের প্রতি কীভাবে বৈষম্য করা হয়েছে তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের তুলে ধরার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সে সময় পাইলাম কই!
“আমরা অনেকবার আলোচনার কথা বলেছি, কেউ কথা বলেনি। এখন সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও নানা রকম কথা বলা হচ্ছে।”
নয় মাস আগে আন্দোলন শুরু করা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সম্প্রতি বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর তাদের কর্মসূচি আরও কঠোর করেছেন।
দাবি আদায় না হওয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকে সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকরা, যাতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার রাজধানীতে এক জনসভায় শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।