বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।”
গ্রেপ্তারের পর লিটনকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার স্ত্রীকেও দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গাইবান্ধা পাঠানো হবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা মুনতাসিরুল।
এই মাসের শুরুতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক শিশুকে গুলি করার অভিযোগে মামলার পর আত্মগোপনে ছিলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলাও হয়।
দুই মামলায় জামিন চাইতে গত সোমবার হাই কোর্টে হাজির হয়ে প্রকাশ্য হন লিটন। কিন্তু জামিন আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট তাকে গত ১৮ অক্টোবরের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়।
নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের যে আদেশ হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা স্থগিত চেয়ে বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে পক্ষে আদেশ নেন।
দুপুরে আদেশের পর এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তারে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। এরপর রাতেই গ্রেপ্তার হলেন এই জনপ্রতিনিধি।
লিটনকে গ্রেপ্তারের আইনি সুযোগ নিয়ে অস্পষ্টতা কাটাতে চেম্বার আদালতে এই আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২ অক্টোবর গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য লিটনের ছোড়া গুলিতে শাহাদাত হোসেন সৌরভ নামে নয় বছর বয়সী এক শিশু আহত হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
আহত সৌরভের বাবা সাজু মিয়া ঘটনার পরদিন সাংসদ লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন হাফিজার রহমান নামে সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর শাহাবাজ গ্রামের এক বাসিন্দা।
ওই দুই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে লিটন হাই কোর্টে আবেদন করলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর অবকাশকালীন বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করে দেয়।
সেইসঙ্গে সাংসদ লিটনকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে গাইবান্ধার মুখ্য বিচারকি হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আদেশের পর সাংসদ লিটনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম দাবি করেন, আদালত যেহেতু আত্মসমর্পণের তারিখ ঠিক করে দিয়েছে, সেহেতু ১৮ অক্টোবরের আগে লিটনকে গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই।
অন্যদিকে অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাই কোর্টের আদেশে পুলিশের প্রতি ‘গ্রেপ্তার না করার’ কোনো নির্দেশনা নেই।
তারপরও পুলিশ প্রশাসন যাতে ‘দ্বিধাগ্রস্ত না হয়’, সেজন্য সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে তখনই জানিয়ে দেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।