সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তারের প্রেক্ষাপটে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
Published : 23 Aug 2015, 09:43 PM
বাংলাদেশের সম্পাদকরা বলছেন, এই ধারাটি স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি।
অধিকারকর্মী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টসহ বিভিন্ন মহল থেকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি উঠলেও তা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
এর মধ্যে রোববার সম্পাদক পরিষদের এক বৈঠকে একই দাবি উঠে আসে বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অপব্যবহার স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। সভায় এ আইনের ১ ও ২ নম্বর ধারা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানানো হয়।”
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা।
২০০৬ সালে হওয়া এ আইনটি ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুই দফা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধনে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর থেকে ১৪ বছর কারাদণ্ড করা হয়। আর ৫৭ ধারার অপরাধকে করা হয় অজামিনযাগ্য।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে নিয়ে এক ফেইসবুকে স্ট্যাটাসের পর গত সপ্তাহে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয় তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা এক মামলায়।
এরপর তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি জোরালো ভাবে ওঠে আবার। এর মধ্যে প্রবীর সিকদারকে জামিনও দেওয়া হয়।
এর এক সপ্তাহ পর সম্পাদক পরিষদ ৫৭ ধারায় প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে।
পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সম্পাদক পরিষদ সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেপ্তার ও হয়রানিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।”
৫৭ ধারাটি মত প্রকাশের সাংবিধানিক স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে এর সমালোচকদের দাবি।
এর প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলছেন, ৫৭ ধারা বাতিলের কোনো ‘সুযোগ নাই’।
“এর সমালোচনা যুক্তিযুক্ত না। বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক অবস্থায় নেই।”
গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে ছিলেন মতিউর রহমান চৌধুরী, মতিউর রহমান, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, শ্যামল দত্ত, ইমদাদুল হক মিলন, নঈম নিজাম, আলমগীর মহিউদ্দিন, তাসমীমা হোসেন, এম শামসুর রহমান, সাইফুল আলম, দেওয়ান হানিফ মাহমুদ ও জাফর সোবহান।