রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারের ভাষণে বলেছেন, তিনি ‘এক দিনের মধ্যে’ ইউক্রেইন যুদ্ধ শেষ করে দেবেন’।
Published : 04 Apr 2024, 10:41 PM
ইউরোপ ও আমেরিকার এক অপরকে প্রয়োজন এবং ‘একজোট থাকলে অধিক শক্তিশালী হয়ে ওঠে’ বলে মনে করেন নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ।
যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক এক জোটের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ কথা বলেন তিনি।
বলেন, “আমি একা আমেরিকায় বিশ্বাস করি না, একইভাবে একা ইউরোপে বিশ্বাস রাখি না।
“আমি নেটোতে ইউরোপ ও আমেরিকার একজোটে বিশ্বাস রাখি। কারণ, একসঙ্গে আমরা অধিক শক্তিশালী ও অধিক নিরাপদ।”
বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ভাষণে নেটো প্রধান আরও বলেন, ইউক্রেইনকে আরও দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক সহায়তা প্রদানের জন্য নেটো জোট থেকে পাঁচ বছরে মেয়াদে ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডের একটি তহবিল গঠনের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। যাতে যুক্তরাষ্ট্র বা নেটো জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে সরকার বা রাজনীতিতে পরিবর্তন আসলেও কিইভ যেনো আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকিতে না পড়ে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেইনকে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ কংগ্রেসে কয়েক মাস ধরে আটকে আছে। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা তা আটকে দিয়েছেন।
এদিকে, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারের ভাষণে বলেছেন, তিনি ‘এক দিনের মধ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধ শেষ করে দেবেন’। নিজের প্রথম মেয়াদে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট নেটো জোট থেকে যুক্তরাষ্ট্রেকে সরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন।
নিজের ভাষণে স্টলটেনবার্গ বলেন, নেটোকে অবশ্যই ‘সঠিক কাজটি করতে হবে’। ১২টি দেশ নিয়ে যে জোট গঠিত হয়েছিল সেটি এখন ৩২ দেশের জোটে পরিণত হয়েছে। জোটের সর্বশেষ দুই সদস্য সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড।
রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেইনকে আক্রমণ করার পর নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশদুটি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে গিয়ে নেটো জোটে যোগ দেয়।
এদিকে স্টলটেনবার্গের ভাষণের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া এবং নেটো ‘ধীরে ধীরে মুখোমুখি সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে’। কারণ, নেটো জোট এরইমধ্যে ইউক্রেইন ঘিরে হওয়া যুদ্ধে ‘হস্তক্ষেপ’ করে ফেলেছে।
“যদিও নেটো একটি প্রতিরক্ষা জোট। তবে এই আসলে সংঘাতের একটি হাতিয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা পরিকল্পিত, সাজানো, তৈরি এবং নিয়ন্ত্রিত। এবং এখন এটি ‘বিশৃঙ্খলা তৈরির একটি উপাদান’ হয়ে গেছে।
৩২ সদস্যের এই জোট ইউক্রেইনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সামরিক সহায়তার পরিকল্পনা শুরু করতে সম্মত হলেও বেশ কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র শুধু কাগজে-কলমে সমর্থন দিয়েছে। যেমন হাঙ্গেরি। রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক রয়েছে। হাঙ্গেরি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, তারা ‘নেটোর এমন কোনো প্রস্তাবনাকে সমর্থন করবে না যা জোটকে যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে বা এটিকে রক্ষণাত্মক থেকে আক্রমণাত্মক জোটে স্থানান্তর করতে পারে’।
হাঙ্গেরি সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেইনের যুদ্ধে কিইভকে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রেহের উদ্যোগ থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছে। এছাড়াও, একটা সময় ধরে ইউক্রেইনের জন্য ইইউর ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা পরিকল্পনা আটকে রেখেছিল দেশটি।