প্রতিক্রিয়ায় চীন তাৎক্ষণিকভাবে জাপান থেকে সব ধরনের সিফুড আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেয়।
Published : 24 Aug 2023, 02:25 PM
ভূমিকম্প ও সুনামিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিশোধিত তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলা শুরু করেছে জাপান।
বৃহস্পতিবার দেশটির স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩ মিনিট থেকে ভূগর্ভস্থ একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে পানি সাগরে ফেলা শুরু করে তারা।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীন তাৎক্ষণিকভাবে জাপান থেকে সব ধরনের সিফুড আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। চীন আগে থেকেই ফুকুশিমা ও আশপাশের কয়েকটি প্রিফেকচার থেকে সিফুড আমদানি নিষিদ্ধ করে রেখেছিল, এবার নিষেধাজ্ঞা বিস্তৃত করে পুরো জাপানকেই এর আওতায় নিয়ে এল।
এক বিবৃতিতে চীনের এক শুল্ক কর্মকর্তা বলেছেন, “চীনে রপ্তানি করা জাপানি খাদ্য ও কৃষিপণ্যে তেজস্ক্রিয় দুষণের ঝুঁকির বিষয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।”
১২ বছর আগে ২০১১ সালে জাপানের পূর্ব উপকূলে দেশটিতে এ পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ফুকুশিমা-দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন কেন্দ্রটির পারামণবিক চুল্লি গলে গিয়ে বিশাল এলাকাজুড়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল।
ধ্বংস হয়ে যাওয়া কেন্দ্রটির তেজস্ক্রিয় পানি পরিশোধনের পর সেটি মহাসাগরে ফেলা ফুকুশিমা-দাইচি প্লান্ট বন্ধ করে দেওয়ার দীর্ঘ ও কঠিন প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রধান একটি পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দুই বছর আগে মহাসাগরে পরিশোধিত তেজস্ক্রিয় পানি ফেলার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল জাপান সরকার, আর জাতিসংঘের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) গত মাসে এর অনুমোদন দেয়।
ফুকুশিমা কেন্দ্রটির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার (টেপকো) জানিয়েছে, তারা বর্জ্য পানি ফেলা শুরু করার পর থেকে পাম্প ও আশপাশের স্থাপনাগুলোতে কোনো অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করেনি।
জাপানের পরিশোধিত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পানি মহাসাগরে ফেলার এই পরিকল্পনার দৃঢ় বিরোধিতা করছে চীন। নিজেদের কথা পুনব্র্যক্ত করে করে তারা বলেছে, এই পানি মহাসাগরে ফেলার বৈধতার কোনো প্রমাণ দেয়নি জাপান সরকার।
বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “জাপানি পক্ষের উচিত না নিজেদের স্বার্থপর উদ্দেশ্যে স্থানীয় জনগণ এবং বিশ্ববাসীর ক্ষতি করা।”
অপরদিকে ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন দাবি’ ছড়ানোর জন্য চীনের সমালোচনা করেছে জাপান।
এই বর্জ্য পানি সাগরে ফেলায় লোকজন ও পরিবেশের ওপর যে প্রভাব পড়বে তা ‘নগণ্য’, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থারও (আইএইএ) এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে জাপান। পানি নিষ্কাশনের পুরো বিষয়টি নিরাপদ বলে দাবি করেছে তারা।
তাদের এসব দাবি সত্ত্বেও খোদ জাপানে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
আরও খবর: