সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পৈতৃক বাড়ির কাছে ও দেশটির ভূমধ্যসাগরের উপকূলে রাশিয়ার প্রধান সামরিক ঘাঁটির সন্নিকটে এবং দামেস্কে কয়েকটি ইরানি অবস্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোববার তার্তুস প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ও রাজধানীতে একযোগে চালানো ওই দুই হামলায় তিন সেনা নিহত ও আরও তিন জন আহত হয়েছে। তবে কোথায় এসব হামলা চালানো হয়েছে তা সুর্নিদিষ্টভাবে জানায়নি তারা।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর পক্ষত্যাগকারী দুই সেনা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, দামেস্কের উত্তরপূর্ব প্রান্তে চালানো হামলাগুলো লেবাননের ইরানপন্থি গোষ্ঠী হেজবুল্লাহর অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
তার্তুসের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, বন্দর শহরটির দক্ষিণে আবু আফসা গ্রামের কাছে একটি ইরানি ঘাঁটিতে এবং নিকটবর্তী একটি রাডার স্টেশন ও বিমান প্রতিরক্ষা অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিরিয়ায় কথিত ইরানি অবস্থানগুলোতে কয়েকশতবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু রাশিয়ার মূল সামরিক ঘাঁটিগুলোর অবস্থান যে উপকূলীয় প্রদেশগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে হামলা এড়িয়ে গেছে।
ইসরায়েলি ও আঞ্চলিক সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধির গতি কমিয়ে দিতে এসব হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল যাকে ‘নিচু মাত্রার সংঘাত’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
তবে এবার তার্তুস বন্দরে রাশিয়ার নৌবাহিনীর ভূমধ্যসাগরের একমাত্র ঘাঁটির কাছে কয়েকটি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই নৌঘাঁটিতে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ নোঙর করা আছে। এছাড়া রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মেইমিম বিমান ঘাঁটিও নিকটবর্তী লাতাকিয়া প্রদেশে।
সিরিয়ায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের গতি ইরানের পাশাপাশি রাশিয়ার হস্তক্ষেপে পুরোপুরি প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষে ঘুরে যায়।
দেশটির উপকূলীয় এলাকাগুলোতে প্রধানত আসাদের সংখ্যালঘু আলাউইত সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে। সংখ্যালঘু হলেও সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতার উচ্চস্তরে আলাউইতরাই আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
সিরিয়ার অবস্থানরত রাশিয়ার বাহিনীগুলো দেশটিতে ইরান সমর্থিত বাহিনীগুলোর অবস্থান ও সম্পদের ওপর ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে নিয়মিত চোখ বন্ধ করে থেকেছে। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েল ইউক্রেইন যুদ্ধের নিন্দা করায় এবং রাশিয়া একটি ইহুদি অভিবাসন সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।