সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে কাছে টেনে নিচ্ছে সৌদি আরব

ইরানের পর সিরিয়ার সঙ্গেও সম্প্রীতি গড়ার পথে সৌদি আরব। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে আরব লিগ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা চলছে।

রয়টার্স
Published : 2 April 2023, 06:04 PM
Updated : 2 April 2023, 06:04 PM

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে আরব লিগ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব সরকার। আগামী মে মাসে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এ সম্মেলন।

আসাদ এ সম্মেলনে অংশ নিলে আনুষ্ঠানিকভাবে সিরিয়ার আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটবে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তিন কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।

আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র নিয়ে শিগগিরই সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান দামেস্ক যাবেন বলেও জানিয়েছেন দুই কর্মকর্তা।

আগামী ১৯ মে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আরব লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

এতে আসাদকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জানতে রয়টার্স থেকে সৌদি সরকারের যোগাযোগ কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে আরব লিগ মহাসচিবের মুখপাত্র জামাল রুশদি বলেন, ‘‘অনুমিত সফর সম্পর্কে আমাদের আগেভাগে কিছু জানানোর কথা না।”

সিরিয়া একসময় আরব লিগের সদস্য ছিল। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ দমনে প্রেসিডেন্ট আসাদের চরম কঠোর অবস্থানের জেরে ২০১১ সালে দেশটিকে আরব লিগ থেকে বরখাস্ত করা হয়। ওই বছরই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যা এখনও শেষ হয়নি।

এখনও অনেক পশ্চিমা এবং আরব দেশ সিরিয়াকে বয়কট করে রেখেছে।

২২ সদস্যের আরব লিগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতীকীই হবে। তবে এটি নিশ্চিতভাবেই গৃহযুদ্ধ নিয়ে সিরিয়ার প্রতি আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটাবে।

প্রায় এক যুগের গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। অসংখ্য বিদেশি শক্তি ওই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছে এবং দেশটিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে।

গত মাসে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রোজার মাসের পর রিয়াদ এবং দামেস্ক পরষ্পরের দেশে নিজেদের দূতাবাস পুনরায় চালু করার বিষয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে।

যদিও সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ওই চুক্তির বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। তবে বলা হয়, কনস্যুলার সার্ভিস পুনরায় শুরু করতে তারা সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছে।

আরব লিগের আরেক প্রভাবশালী সদস্যরাষ্ট্র মিশরও আসাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ শুরু করেছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কায়রো সফরে গিয়েছেন এবং শনিবার উভয় দেশ সহযোগিতার সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে একটি চুক্তিতে একমত হয়েছেন। এক দশকের বেশি সময় পর সিরিয়ার কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটিই প্রথম মিশর সফর।

তবে কেউ কেউ এখনও সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছেন। যেমন: যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার। তারা গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকারের বর্বরতার কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, সিরিয়া রাজনৈতিকভাবে তাদের সংকট সমাধানের পথে হাঁটছে কিনা সেটিও দেখা প্রয়োজন।

শুধু ‍সিরিয়া নয় বরং সিরিয়ার প্রধান সমর্থক এবং এক সময়ে সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক শত্রু ইরানের সঙ্গেও অতীত তিক্ততা ভুলে সম্পর্কের সেতুবন্ধন গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে গত মাসে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়।