ইসরায়েল সরকারের বিতর্কিত ‘বিচারব্যবস্থা সংস্কার’ নিয়ে দেশটিতে সৃষ্ট সংকটের মুখে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বলায় চটেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, “তারা (ইসরায়েল) এই পথে চলতে পারে না।” ইসরায়েলকে বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানান তিনি।
আর এতেই ক্ষু্ব্ধ প্রতিক্রিয়া জনিয়ে নেতানিয়াহু পরে এক টুইটে বলেন, “ইসরায়েল তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেবে। বাইরের চাপের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে না।”
নেতানিয়াহুর বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে গভীর সংকটে পড়েছে ইসরায়েল। পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে রাজপথ, সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের আগুন।
গত সোমবার রাজধানী তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে এবং পার্লামেন্টেও সংসদীয় কমিটির আলোচনায় বিরোধী দলের নেতারা ক্ষমতাসীন দলের ওপর চড়াও হয়।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার পর নেতানিয়াহু বাধ্য হন কিছুদিনের জন্য পরিকল্পনাটি নিয়ে আলোচনা প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে।
ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টর-ডানপন্থি সরকার চাইছে বিচারক নিয়োগ কমিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করায়ত্ব করতে।
নেতানিয়াহু বলছেন, বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হলে আদালতকে এর এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া থেকে বিরত করা যাবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এ পদক্ষেপ নেতানিয়াহুর জন্য সহায়ক হবে। কারণ, তিনি দুর্নীতির দায়ে বিচারের মুখে আছেন।
বিবিসি জানায়, গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নর্থ ক্যারোলাইনায় সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখার সময় ইসরায়েলের জোট সরকারকে বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা বাদ দিতে বলেন।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের অনেক শক্তিশালী সমর্থকের মতো আমিও খুবই উদ্বিগ্ন। আমি উদ্বিগ্ন যে তারা এ পথ বেছে নিয়েছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী এমনকিছু করবেন, যাতে তিনি আপোসমূলক কিছু একটা করার চেষ্টা নিতে পারেন। তবে সেটি এখনও দেখার বাকি।”
এরপরই টুইটে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষুব্ধ জবাবে বলা হয়, “ইসরায়েল একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। তারা জনগণের ইচ্ছায় নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সুহৃদ কোনও বন্ধুরাষ্ট্রের কথায় কিংবা বিদেশের চাপের ভিত্তিতে নয়।”
ইসরায়েলে নতুন মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর এখন হোয়াইট হাউজ তাকে নিয়ে খুশি কিনা সেটি নেতানিয়াহুর জন্য একটি পরীক্ষা হিসাবেই দেখা হচ্ছে।