তাপপ্রবাহের পর এবার ইউরোপের তিন দেশে ঝড়ে নিহত ১২

ইতালি, অস্ট্রিয়া এবং ফ্রান্সের দ্বীপ কর্সিকায় শক্তিশালী ঝড়ে তিন শিশুসহ অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2022, 02:50 PM
Updated : 19 August 2022, 02:50 PM

কয়েক সপ্তাহের তীব্র তাপপ্রবাহ এবং খরার পর এবার ঝড়ের কবলে পড়েছে ইউরোপের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চল। ইতালি, অস্ট্রিয়া এবং ফ্রান্সের দ্বীপ কর্সিকায় শক্তিশালী ঝড়ে তিন শিশুসহ অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়েই বেশির ভাগের মৃত্যু হয়েছে। ফ্রান্সের কর্সিকা দ্বীপে ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে বয়ে যাওয়া বাতাসে গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্বীপ এলাকায় তাঁবুর একটি শিবিরের ওপর গাছ পড়ে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় ৪৬ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তিও মারা গেছেন।

ঝড়ে সৈকতের একটি কুটিরের চালা উড়ে গিয়ে একটি গাড়িতে আছড়ে পড়ে এক নারী আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স ৭০ এর কোঠায়। এছাড়া, সাগরে এক জেলে এবং এক নারী মারা গেছে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার কর্সিকা দ্বীপ পরিদর্শনকালে ঝড়ে ২০ জন আহত হওয়ার খবর জানান। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।

ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাগুলো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং মার্সেই শহরের রাস্তা প্লাবিত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এই ঝড় একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ঝড়ের কোনও পূর্ব সতর্কতাও দেওয়া হয়নি। এক রেস্তোরাঁ মালিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “এত শক্তিশালী ঝড় আমি কখনও দেখিনি। আমার মনে হয় এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ছিল।”

বিবিসি জানায়, অস্ট্রিয়ার কারিনথিয়া অঞ্চলে ঝড়ে একটি লেকের কাছে গাছ উপড়ে পড়ে দুই কিশোরী নিহত হয়েছে। একই কারণে লোয়ার অস্ট্রিয়া প্রদেশে আরও তিনজন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে গণমাধ্যম। প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং ভূমিধসে কারিনথিয়ার কিছু অংশ বিপর্যস্তও হয়েছে।

ওদিকে, ইতালির তুসকানি অঞ্চলে গাছ উপড়ে পড়ে এক পুরুষ ও এক নারী নিহত হয়েছে। ভেনিস নগরীতে ঝোড়ো বাতাসে ক্যাথেড্রাল বেল টাওয়ারের ইটের দেয়াল ধসে পড়েছে। ঝড়ে তুসকানি ও উত্তরাঞ্চলীয় লিগুরিয়াতে সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে তাপপ্রবাহও এখনও চলছে। সিসিলি দ্বীপে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

ইউরোপের বিভিন্ন অংশে কয়েক সপ্তাহ ধরেই নজিরবিহীন উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে ঝড়ের তান্ডব।

মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে। প্রায়ই চরম মাত্রার তাপপ্রবাহ ও ঝড় দেখা দিচ্ছে।