ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল: নিউ জিল্যান্ডে ৪৬ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎবিহীন

অকল্যান্ডে রেকর্ড বৃষ্টি ও তাতে দেখা দেওয়া বন্যায় চারজনের মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ল দেশটি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2023, 08:44 AM
Updated : 13 Feb 2023, 08:44 AM

নিউ জিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলের তাণ্ডবে প্রায় ৪৬ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।  

ভারি বৃষ্টি ও প্রবল ঝড়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ, এ পর্যন্ত কয়েকশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।  

গ্যাব্রিয়েল নিউ জিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডের কাছে থাকায় কর্তৃপক্ষ কিছু এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, জানিয়েছে বিবিসি।  

বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে রেকর্ড বৃষ্টি ও তাতে দেখা দেওয়া বন্যায় চারজনের মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ল দেশটি।

“দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পেছন পেছন আরেক দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এসে হাজির হয়েছে,” বলেছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। দুর্গতদের জন্য তিনি ৭৩ লাখ ডলারের ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

“পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে অনেক খারাপ হবে বলে মনে হচ্ছে,” বলেছেন তিনি।

সোমবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে নিউ জিল্যান্ডের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী কিরান ম্যাকঅ্যানাল্টি জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা জারির কথা বিবেচনা করছে সরকার।

যদি তা করা হয় তাহলে এটি হবে নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা জারির ঘটনা। 

ইতোমধ্যেই অকল্যান্ডসহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এ ঘোষণার ফলে ওইসব এলাকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আরও বেশি ক্ষমতা নিয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে পারবে এবং তারা ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ ও ত্রাণ দিতে পারবে।

নিউ জিল্যান্ডের আবহাওয়া সংস্থা মেটসার্ভিস জানিয়েছে, অকল্যান্ডের উত্তরের শহর ফাঙ্গারেইতে সর্বশেষ ১২ ঘণ্টায় ১০০ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।  

ম্যাকঅ্যানাল্টি জানিয়েছেন, ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ প্রবল বাতাস ও ভারি বৃষ্টির মিলে সোমবারকে ‘সঙ্কটজনক দিন’ করে তুলতে পারে। উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যাচ্ছে, অকল্যান্ড হারবার ব্রিজ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ধাক্কায় দুলছে।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে কাজ করা ‘অনিরাপদ’ হওয়ায় পাওয়ার গ্রিডে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে আবহাওয়া কর্মকর্তারা গ্যাবরিয়েল তেমন তীব্র হবে না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার মেটসার্ভিস এর সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি এখনও ‘উল্লেখযোগ্য ভারি বৃষ্টিপাত ও সম্ভাব্য ক্ষতিকারক ঝড়ো হাওয়ার’ কারণ হতে পারে। 

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলে উঠে আসার আগেই এর তাণ্ডবে গাছপালা উপড়ে পড়ছে, রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে পড়েছে। 

অকল্যান্ড ও নর্থ আইল্যান্ডের বহু স্কুল ও স্থানীয় সরকারের স্থাপনা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং লোকজনকে প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে।

ইতোমধ্যে এয়ার নিউ জিল্যান্ডের ৫০৯টি ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় প্রায় ১০ হাজার আন্তর্জাতিক যাত্রীর সূচি বিঘ্নিত হয়েছে। তবে মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছে নিউ জিল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটি।