ঔপনিবেশিক তাঞ্জানিয়ায় মাজি মাজি বিদ্রোহের সময় জার্মানির বাহিনী প্রায় তিন লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল।
Published : 02 Nov 2023, 01:36 PM
আফ্রিকার দেশ তাঞ্জানিয়ায় ঔপনিবেশিক আমলে করা নৃশংসতার জন্য জার্মানির প্রেসিডেন্ট ‘লজ্জা’ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
১৯০৫ থেকে ১৯০৭ সাল পর্যন্ত দুই বছর ধরে চলা মাজি মাজি বিদ্রোহের সময় জার্মানির বাহিনী প্রায় তিন লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল। এটি সবচেয়ে রক্তাক্ত উপনিবেশবিরোধী বিদ্রোহগুলোর মধ্যে একটি।
বুধবার তাঞ্জানিয়ার দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রুভুমা অঞ্চলের রাজধানী সোনগেয়ার মাজি মাজি জাদুঘরে বক্তৃতা করার সময় প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাইটা স্টাইনমায়ার বলেন, “এখানে আপনাদের পূর্বসূরীদের সঙ্গে জার্মানরা যা করেছিল তার জন্য আমি ক্ষমা চাই। এখানে যা ঘটেছিল তা আমাদের যৌথ ইতিহাস, আপনাদের পূর্বসূরীদের ইতিহাস আর আমাদের জার্মানির পূর্বসূরীদের ইতিহাস।”
তাঞ্জানিয়ার সোনগেয়াতেই মাজি মাজি বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল। রপ্তানির লক্ষ্যে তুলা চাষের জন্য স্থানীয়দের বাধ্য করার এক জার্মান নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল রুভুমা অঞ্চলের বাসিন্দারা। তাঞ্জানিয়া তখন জার্মান ইস্ট আফ্রিকার অংশ ছিল। বর্তমান রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি ও মোজাম্বিকের কিছু অংশও তখন এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রেসিডেন্ট স্টাইনমায়ার বলেন, তিনি আশা করেন তাঞ্জানিয়া ও জার্মানি অতীতের ‘সাম্প্রদায়িক প্রক্রিয়াকরণ’ এর বিষয়ে কাজ করতে পারবে।
মাজি মাজি গণহত্যার ইতিহাস যেন তার দেশের লোকজন আরও বেশি করে জানতে পারেন তার জন্য তিনি ‘এসব ইতিহাস জার্মানিতে নিয়ে যাবেন’ বলে প্রতিশ্রুতি দেন স্টাইনমায়ার।
তাঞ্জানিয়ায় তিন দিনের এই সফরের অংশ হিসেবে স্টাইনমায়ার মাজি মাজি নেতাদের অন্যতম সর্দার সোনগেয়া বানোর উত্তরসূরীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯০৬ সালে যাদের হত্যা করা হয়েছিল সর্দার বানোও তাদের মধ্যে ছিলেন।
বানোকে এখন তাঞ্জানিয়ার জাতীয় বীর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বানোর দেহাবশেষ খুঁজে বের করতে জার্মানির কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করবে বলে তার পরিবারকে আশ্বাস দেন স্টাইনমায়ার।
যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসেবে উপনিবেশগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষের দেহাবশেষ জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেগুলো ‘বর্ণবাদী গবেষণার’ জন্যও ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।