সম্পদ জব্দ করলে সম্পর্ক শেষ, যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র’ ঘোষণা করলেও ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্ক টুটে যেতে পারে বলে সাবধান করেছেন ঊর্ধ্বতন রুশ কর্মকর্তা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 06:32 AM
Updated : 14 August 2022, 02:14 PM

যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে রাশিয়ার কোনো সম্পদ জব্দ করলে তা মস্কো-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একেবারেই শেষ করে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা বিভাগের প্রধান আলেক্সান্ডার দারশিভ।

শনিবার তিনি এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ লাখো সেনা পাঠানোর পর মস্কোর সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়।

রাশিয়ার অভিযানের পাল্টায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মস্কোর ওপর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়; ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে হামলার আগে মস্কোর যে পরিমাণ স্বর্ণ ও ৬৪০ বিলিয়ন ডলারের মতো বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ছিল তার প্রায় অর্ধেক আটকেও রেখেছে তারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জব্দ করে ইউক্রেইনের ভবিষ্যত অবকাঠামো পুনর্গঠনে ওই অর্থ কাজে লাগানোর ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

“এই ধরনের (সম্পদ জব্দ) পদক্ষেপের মারাত্মক পরিণতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে সাবধান করছি আমরা; এসব পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্থায়ী ক্ষতি করবে, যা তাদের বা আমাদের কারও কাম্য নয়,” তাসকে এমনটাই বলেছেন দারশিভ।

সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা বিভাগের এ প্রধান কোন সম্পদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্র এবং এর ইউরোপীয় মিত্ররা এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সম্পদশালী ব্যক্তিদের ইয়ট, হেলিকপ্টারসহ তিন হাজার কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে বলে জানিয়েছে জো বাইডেনের প্রশাসন।

জুলাইয়ে দেশটির এক কৌঁসুলি জানিয়েছিলেন, রুশ ধনকুবেরদের সম্পদ জব্দের মাধ্যমে মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয় কংগ্রেসের কাছে আরও বিস্তৃত ক্ষমতা চাইছে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র’ ঘোষণা করে তাহলেও ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর কূটনৈতিক সম্পর্ক খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমনকী পুরোপুরি টুটে যেতে পারে বলেও দারশিভ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ইউক্রেইনের ওপর ওয়াশিংটনের প্রভাব বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে যুক্তরাষ্ট্র এখন ক্রমশ ‘সরাসরি সংঘাতে অংশ নেওয়া পক্ষ হয়ে উঠছে’, বলেছেন তিনি।

মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বন্দি বিনিময় নিয়ে কথা চলছে বলেও রুশ এ কর্মকর্তা তাসকে নিশ্চিত করেছেন।

রাশিয়ার হাতে আটক মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রিনার ও সাবেক মেরিন সদস্য পল হোয়েলানের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাছে বন্দি অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিক্টর বোটকে ছেড়ে দিতে পারে বলে বেশ কিছুদিন ধরে কানাঘুষাও চলছে।