কাবুলে বোমা হামলায় তালেবান ধর্মীয় গুরু হাক্কানি নিহত

আফগানিস্তানের রাজধানীতে এক ইসলামিক সেমিনারিতে হামলা হয়। পা হারানো এক ব্যক্তি তার প্লাস্টিকের কৃত্রিম পায়ের মধ্যে বিস্ফোরক নিয়ে এসে বিস্ফোরণ ঘটায়।

রয়টার্স
Published : 11 August 2022, 05:12 PM
Updated : 11 August 2022, 05:12 PM

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন বিশিষ্ট তালেবান ধর্মীয় গুরু শেখ রহিমুল্লাহ হাক্কানি।

তালেবান ও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার কাবুলে এক ইসলামিক সেমিনারিতে হামলা হয়। পা হারানো এক ব্যক্তি তার প্লাস্টিকের কৃত্রিম পায়ের মধ্যে করে বিস্ফোরক নিয়ে এসে বিস্ফোরণ ঘটায়।

কোন জঙ্গি গোষ্ঠী এ হামলার জন্য দায়ী তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর আগে রহিমুল্লাহ হাক্কানিকে হামলার নিশানা করেছিল। নামে হাক্কানি থাকলেও রহিমুল্লাহ আফগানিস্তানের হাক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠী নেটওয়ার্কের কেউ নন।

আগের কয়েকটি হামলা থেকে হাক্কানি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০২০ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে আইএস এর চালানো বড় ধরনের একটি হামলা অন্যতম। ওই হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছিল।

শেখ রহিমুল্লাহ হাক্কানি ছিলেন আফগান তালেবান সরকারের সমর্থক এবং ‘ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশ’ (আইএস-কে)- এর ঘোর সমালোচক। আইএস-কে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এর আঞ্চলিক শাখা। এই শাখা আফগানিস্তানে সক্রিয় এবং তারা তালেবান শাসনের বিরোধী।

তার মৃত্যুতে আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র বিলাল করিমি বলেছেন, “খুবই দুঃখের সংবাদ এই যে, সম্মানিত ধর্মীয় গুরু (শেখ রহিমুল্লাহ হাক্কানি) শত্রুদের কাপুরুষোচিত হামলায় শহীদ হয়েছেন। আফগানিস্তান ইসলামিক আমিরাতের জন্য এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।”

হামলার পেছনে কারা জড়িত তা জানতে কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

গত অগাস্টে আফগানিস্তানের দখল নেয় তালেবান। তারপর থেকে এই এক বছরে শেখ হাক্কানিই সর্বোচ্চ পর্যায়ের তালেবান নেতা, যার মৃত্যু হল বোমা হামলায়।

এই ধর্মীয় গুরু নারীশিক্ষার পক্ষে ছিলেন। আফগানিস্তানে বিতর্কিত নারী শিক্ষার সমর্থনে শেখ হাক্কানি এর আগে ফতোয়াও জারি করেছিলেন। শরিয়া আইনে নারীদের শিক্ষার অনুমতি না দেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই বলে বিবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

তালেবান গোষ্ঠী এবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর নিরাপত্তা ফিরিয়ে এনেছেন বলে দাবি করলেও দেশটিতে অহরহই বোমা হামলা হচ্ছে। এসব হামলার বেশিরভাগই চালাচ্ছে আইএস। সম্প্রতি কয়েকমাসে বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি তালেবান নেতারাও এইসব হামলার নিশানা হচ্ছেন।