ট্রাম্পের কথামতো কাজ করলে যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী পাল্টা আঘাতের মুখোমুখি হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন খামেনি।
Published : 31 Mar 2025, 04:35 PM
তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তিতে না পৌঁছালে দেশটিতে বোমা মারার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
ট্রাম্পের ওই কথামতো কাজ করলে যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী পাল্টা আঘাতের মুখোমুখি হবে বলে সোমবার হুঁশিয়ার করেছেন খামেনি।
মার্চের প্রথমদিকে ইরানের নেতৃবৃন্দের কাছে এক চিঠিতে আলোচনার রূপরেখা দিয়ে প্রস্তাব পাঠান ট্রাম্প, তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তেহরানকে দুই মাস সময় দেওয়া হয়। রোববার ট্রাম্প জানান, তার প্রস্তাব গ্রহণ না করলে ইরানে বোমা মারা হবে।
এর জবাবে খামেনি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শত্রুতা সবসময়ই ছিল। তারা আমাদের আক্রমণের হুমকি দিয়েছে, তবে তা খুব সম্ভাব্য বলে আমরা মনে করি না; কিন্তু তারা যদি কোনো অনিষ্ট করে তবে তারা নিশ্চিতভাবেই শক্তিশালী পাল্টা আঘাতের মুখোমুখি হবে।
“আর যদি তারা আগের বছরগুলোর মতো এই দেশের ভেতরে রাষ্ট্রদ্রোহ ঘটানোর কথা ভাবতে থাকে, তাহলে ইরানের জনগণ নিজেরাই তাদের মোকাবেলা করবে।”
ইরানে পুলিশে হেফাজতে মাশা আমিনি নামের এক নারীর মৃত্যু হওয়ার পর ২০২২-২০২৩ সালে দেশজুড়ে যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছিল তার জন্য এবং এ ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনার জন্য পশ্চিমাদের দায়ী করেছে ইরানের কর্তৃপক্ষ। খামেনি এসব ঘটনার ইঙ্গিত করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইরান রোববার ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, খামেনির নির্দেশ অনুসারে তেহরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনায় যোগ দেবে না কিন্তু পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক টুইটে বলেছেন, “ইরানের বিরুদ্ধে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের ‘বোমা মারার’ প্রকাশ্য হুমকি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক। এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার মূলনীতির প্রতি অবমাননা।
“সহিংসতা সহিংসতার জন্ম দেয়, শান্তি শান্তি নিয়ে আসে। যুক্তরাষ্ট্র পথ বেছে নিয়ে পরিণতি মেনে নিতে পারে।”
ট্রাম্প ২০১৭ থেকে ২১ পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৫ সালে ইরান ও ছয় বিশ্ব শক্তির মধ্যে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। ওই চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচীর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। চুক্তি থেকে বের হয়েই ট্রাম্প তেহরানের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছিলেন।
তারপর থেকে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া সীমা অতিক্রম করে অনেকটা এগিয়ে গেছে।