কিম ইয়ং-হিউনের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সৌদি আরবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চোই বিয়াং-হিয়াককে মনোনীত করেছেন।
Published : 05 Dec 2024, 02:52 PM
প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর সপ্তাহান্তে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা।
বৃহস্পতিবার তারা এই ঘোষোণা দিয়েছেন।
সামরিক আইন জারির ঘোষণা এবং চাপের মুখে তা প্রত্যাহারের পর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল এবার পার্লামেন্টে অভিশংসনের মুখে পড়েছেন। আইনপ্রণেতারা বুধবার তার বিরুদ্ধে বিল এনে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
কয়েক দশকের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেওয়া আকস্মিক এক ভাষণে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন উপস্থিত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সামরিক আইন প্রত্যাহার করার একটি প্রস্তাব পাস করেন। এদের মধ্যে ইউনের দলের ১৮ সদস্যের সবাই ছিলেন। প্রেসিডেন্ট তখন তার ঘোষণা বাতিল করতে বাধ্য হন।
প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর স্থানীয় সময় আগামী শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দলের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিকে, ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা কিম সিউং-উন জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বলেন, “ইউন সুক ইওল সরকারের জরুরি সামরিক আইন ঘোষণার ফলে জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি ও ভয় সৃষ্টি হয়েছে।”
কিমের পরামর্শেই ইউন সামরিক আইন জারি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই জন্যই পদত্যাগের ঘোষণা দেন কিম।
পরবর্তীতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীও মনোনয়ন করেছেন।
তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সৌদি আরবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চোই বিয়াং-হিয়াককে মনোনীত করেছেন।
বিশৃঙ্খলার রাত
সামরিক আইন জারির জেরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়া। অভিশংসনের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। ছয়টি দল নিয়ে গঠিত বিরোধী দলগুলোর একটি জোট বুধবার প্রেসিডেন্টের অভিশংসন চেয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
সামরিক আইন বাহিনীর কমান্ডার বলেছিলেন, জনগণের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর তার কোনও ইচ্ছা ছিল না।
উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম বলেছিলেন, এই সৈন্যদের কোনও গোলাবারুদ সরবরাহ করা হয়নি।
এদিকে, ইউনকে বরখাস্ত করা হলে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
যদি প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেন বা তাকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়, তাহলে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২০২২ সালের মে মাসে ভোটে জিতে প্রেসিডেন্ট হন ইউন সুক। তবে গত এপ্রিল থেকে তার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। ওই সময় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জয় পায় বিরোধী দল।
চলতি বছর কয়েকটি দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ালে ইউনের প্রতি জনসমর্থনও অনেকটা কমেছে। এ সমর্থন এখন ১৭ শতাংশের নিচে। দুর্নীতি কেলেঙ্কারির একটি ঘুষ হিসেবে ফার্স্ট লেডির হাতব্যাগ গ্রহণ।