কীসের পদত্যাগ, আরও এক যুগ ক্ষমতায় থাকতে চান জনসন

কোভিড লকডাউনের মধ্যে মদের পার্টি আয়োজন ও তার জেরে উপনির্বাচনে হার নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক চাপে থাকা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া নয়, তার লক্ষ্য হচ্ছে আগামী দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2022, 10:21 AM
Updated : 26 June 2022, 10:21 AM

এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারলে তিনিই হবেন ২০০ বছরের মধ্যে একটানা সবচেয়ে বেশি সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা রাজনীতিক।

অথচ চলতি মাসের শুরুতেই দলের ভেতর নেতৃত্বের পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল তাকে; ৪১ শতাংশ রক্ষণশীল আইনপ্রণেতা তার বিরুদ্ধে অবস্থানও নিয়েছিলেন। পার্লামেন্টকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করেছেন, এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে।

বিবিসি লিখেছে, সম্প্রতি হওয়া উপনির্বাচনে দু্টি আসন হাতছাড়া হওয়ার পর দলের প্রভাবশালী অনেক সদস্যও তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তবুও দায়িত্ব ছাড়তে নারাজ জনসন।

২০১৯ সালের নির্বাচনে জনসনের প্রতি ব্রিটিশ ভোটারদের যে বিপুল সমর্থন দেখা গিয়েছিল, লকডাউনের মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে মদের পার্টি আয়োজন নিয়ে কেলেঙ্কারি তাতে যে ফাটল ধরিয়েছে, উপনির্বাচনের ফলই তা বলছে বলে মত বিশ্লেষকদের।   

কনজারভেটিভ পার্টির নিয়ম অনুযায়ী, দলের ভেতর হওয়া আস্থা ভোটে জিতে যাওয়ায় আগামী এক বছর জনসনের বিরুদ্ধে দলীয় কোনো আইনপ্রণেতাই আর আনুষ্ঠানিক কোনো অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারবেন না। কিন্তু কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও দলের একাধিক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর পদত্যাগ তার অবস্থানকে টলিয়ে দিতে পারে।

যুক্তরাজ্যে জীবনযাত্রার খরচও এখন কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরে সর্বোচ্চ।

কনজারভেটিভ দলের সাবেক নেতা মাইকেল হাওয়ার্ড শুক্রবার বলেছিলেন, এখনই জনসনের সরে দাঁড়ানো উচিত। আর উপনির্বাচনে হারের পর দলের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেন অলিভার ডোডেন।

এতকিছুর পরও জনসন বলছেন, তিনি অঞ্চলভিত্তিক অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে ও যুক্তরাজ্যের আইন ও অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকতে চান।

“এই মুহুর্তে আমি তৃতীয় মেয়াদের কথা এবং তখন কী হতে পারে, তা নিয়ে ভাবছি। সেসময় আমি নিশ্চয়ই এখনকার ভাবনাগুলো পর্যালোচনা করে দেখবো,” বলেন কমনওয়েলথ সম্মেলন উপলক্ষে রুয়ান্ডা সফরে যাওয়া জনসন।

তৃতীয় মেয়াদ বলতে কোন সময় বুঝিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রক্ষণশীল এ রাজনীতিক বলেন, “তৃতীয় মেয়াদ, ওই তো ত্রিশের দশকের মাঝামাঝি।”

নিয়ম অনুযায়ী, জনসনকে অবশ্যই আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন ডাকতে হবে। আগামী দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে হলে তাকে ২০২৯ সালের নির্বাচনেও জিততে হবে।

তিনি যদি ২০৩১ সালের প্রথম দিক পর্যন্তও ক্ষমতায় থাকতে পারেন, তাহলে তিনি মার্গারেট থ্যাচারের রেকর্ড ভাঙবেন।

থ্যাচার ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। গত ২০০ বছরে তার চেয়ে বেশি সময় এই দায়িত্বে ছিলেন রবার্ট ব্যাংক জেনকিনসন, যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টানা দেড় দশক, ১৮১২ থেকে ১৮২৭ পর্যন্ত।