অতিরিক্ত বন্দি! কসোভোর কাছ থেকে কারাগার ভাড়া নিচ্ছে ডেনমার্ক

কারাগারগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত বন্দির চাপ কমাতে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ ডেনমার্ক এখন কসোভোর কাছ থেকে কারাগার ভাড়া নিতে চলেছে।

বিবিসি জানায়, ইউরোপীয় বলকান রাষ্ট্র কসোভো ৩০০টি প্রিজন সেল বা কারাকক্ষ ভাড়া দিতে রাজি হয়েছে ডেনমার্ককে।

সোমবার দুই দেশের সরকার এ সংক্রান্ত পাঁচ বছর মেয়াদী একটি চুক্তি সই করেছে বলে জানানো হয়েছে এক যৌথ বিবৃতিতে।

এই চুক্তিকে বলা হচ্ছে, 'পলিটিক্যাল ডিক্লারেশন অব ইনটেন্ট’। ভাড়া হিসেবে প্রথম পাঁচ বছরে কসোভোকে ১ কোটি ৫০ হাজার ইউরো ফি দেবে ডেনমার্ক।

ভাড়া দেওয়া কারা কক্ষগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য নয় এমন দেশগুলোর দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধীরা থাকবেন।

সাজা শেষে এই অপরাধীদের আর ডেনমার্কে থাকতে দেওয়া হবে না। তাছাড়া, ভাড়া করাকক্ষে রাখা প্রতিটি বন্দির ক্ষেত্রেই ডেনমার্কের আইন বলবৎ থাকবে।

কসোভোতে ৭০০-৮০০টি কারাকক্ষ অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৫ সাল থেকে ডেনমার্কে কারাবন্দির সংখ্যা ৩,৪০০ থেকে বেড়ে ৪,২০০ হয়েছে।

একই সময়ে দেশটিতে কারারক্ষীর সংখ্যা ২,৫০০ থেকে কমে ২,০০০ হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ১,০০০ কারাকক্ষের ঘাটতি দেখা যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ ডেনমার্কের বিচারমন্ত্রী নিক হেকারুপ।

কারাগার ভাড়া নিয়ে কসোভোর সঙ্গে চুক্তি সম্পর্কে এক বিবৃতিতে হেকারুপ বলেন, "এ চুক্তির বদৌলতে আমাদের কারাগারগুলোতে জায়গা বাড়বে। আমাদের কারা কর্মকর্তাদের উপর চাপ কমবে। পাশাপশি এটি দণ্ডিত তৃতীয় দেশের নাগরিকদেরকে এই বার্তাই দেবে যে, ডেনমার্কে আপনাদের ভবিষ্যৎ নেই। তাই এখানে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।”

কসোভো রাজধানী প্রিস্টিনা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের জিলান অঞ্চলে কারাগার ভাড়া দিচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছরে কারাকক্ষের ভাড়া বাবদ ২১ কোটি ইউরো পাবে কসোভো।

তবে ইতোমধ্যে এ পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন উভয় দেশের অধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দেশের নাগরিকদের এভাবে পরিবারের কাছ থেকে দূরে, আরেকটি দেশে পাঠানো উচিত নয়।

ডেনিশ মন্ত্রী নিক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, "আমরা নিয়মের অধীনেই এটি করছি। ডেনমার্কের কারাগারের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য রয়েছে। দেখা করাটা কঠিন হলেও স্থানান্তর করা অপরাধীদের সঙ্গে তাদের পরিবারের লোকজনের সাক্ষাতের সুযোগ থাকবে।"

ওদিকে, কসোভোর বিচার মন্ত্রী হ্যাক্সিউ বলেছেন, উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অপরাধীদের কসোভোতে পাঠানো হবেন না। সন্ত্রাসবাদের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া কিংবা দূরারোগ্য অসুস্থতায় ভুগছেন এমন অপরাধীদেরও কসোভোয় পাঠানো হবে না।

তাছাড়া, ডেনমার্কের সঙ্গে করা চুক্তিটি কসোভোর পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন পেতে হবে।

ইউরোপে অবশ্য এক দেশের বন্দিকে আরেক দেশের কারাগারে স্থানান্তরের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে নরওয়ে এবং বেলজিয়ামও নেদারল্যান্ডসে কারাকক্ষ ভাড়া নিয়েছিল।