যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে তাণ্ডব চালানো শক্তিশালী টর্নেডোতে নিহত হয়েছে অন্তত ৮৩ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে কয়েক ডজন মানুষ। বিধ্বস্ত এলাকায় হন্যে হয়ে জীবিতদের খোঁজে চলছে।
Published : 12 Dec 2021, 07:01 PM
শুক্রবার প্রায় ৩০ টি টর্নেডোতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কয়েকটি শহর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য কেনটাকি তে বিপর্যয় ঘোষণা করেছেন।
সেখানে ৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। তার মধ্যে মেফিল্ডের একটি মোমবাতি কারখানাতেই মারা পড়েছে কয়েক ডজন মানুষ। মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, ধসে পড়া মোমবাতি কারখানা থেকে এরই মধ্যে ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৬০ জন। তবে সেখানে আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ বলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার।
এই রাজ্যের ইতিহাসে এবারের টর্নেডোগুলোই সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তেমনটি কখনো দেখিনি আমি। এটি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। খুব সম্ভবত কেনটাকিতে শতাধিত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।”
বেশিয়ার জানান, জরুরি উদ্ধারকাজে সহায়তা করার জন্য ১৮৯ জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। কেনটকি যেখানে ইলিনয়, মিজৌরি ও আরকানস রাজ্যের সঙ্গে মিলেছে সেই দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় কোণটিতেই মেফিল্ডের অবস্থান। ছোট এই শহরটিতে প্রায় ১০ হাজার লোক বসবাস করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, মেফিল্ডের কেন্দ্রস্থলের পাকা ভবনগুলো ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, কাছে পার্ক করা গাড়িগুলো ইট ও ধ্বংসাবশেষের নিচে প্রায় চাপা পড়ে আছে।
মেফিল্ডের গ্রেভস কাউন্টির আদালত ভবনের ছাদ ভেঙে পড়েছে এবং নিকটবর্তী ফাস্ট ইউনাইটেড মেথোডিস্ট গির্জা আংশিক ধসে পড়েছে।
মেফিল্ডের দমকল প্রধান জেরেমি ক্রিয়েসন (যার নিজের স্টেশনটিই ধ্বংস হয়ে গেছে) জানান, মোমবাতি কারখানাটি গুড়িয়ে গিয়ে ‘লোহা, স্টিল ও মেশিনপত্রের স্তূপে’ পরিণত হয়েছে এবং উদ্ধারকারীদের কখনো কখনো ‘আহতদের কাছে পৌঁছতে নিহতদের ওপর দিয়ে ক্রল করে এগোতে হচ্ছে।”
একটি মোমবাতি কারখানার নিচে চাপা পড়া কর্মী তার মোবাইল ফোনের ফেইসবুকে সাহায্যের আবেদন জানানোর পর তাকেসহ আরও কয়েকজনকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারীরা।
কেনটাকির সরকারি হিসাবে টর্নেডোতে বিভিন্ন রাজ্যে নিহতের পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, আরকানস তে ২ জন, টেনিসিতে ৪ জন, ইলিনয়ে ৬ জন এবং মিজৌরিতে ২ জন নিহত হয়েছে।