ইউক্রেইন নিয়ে ল্যাভরভকে সতর্ক করলেন ব্লিনকেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেইনে আক্রমণ করে তাহলে মস্কোকে ‘ভয়াবহ মূল্য’ দিতে হবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2021, 07:16 AM
Updated : 3 Dec 2021, 07:16 AM

ইউক্রেইন সীমান্তে রুশ সৈন্য সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে তিনি এ সতর্কবার্তা দিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বৃহস্পতিবার স্টকহোমে এক বৈঠকে ল্যাভরভকে এ সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন ব্লিনকেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেইনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শিগগিরই বৈঠক হতে পারে।

“আমাদের গভীর উদ্বেগ এবং রাশিয়াকে তার পদক্ষেপের জন্য জবাবদিহি করতে আমাদের দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি। ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে তারা যদি আরও আগ্রাসী কোনো পদক্ষেপ নেয় সেক্ষেত্রে ভয়াবহ মূল্য ও পরিণতি রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে দিতে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি আছে তার কথাও বলেছি,” বলেছেন তিনি।

“এখন রাশিয়ার ব্যাপার, তারা তাদের সাম্প্রতিক সৈন্য সমাবেশ যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে সেখান থেকে পিছু হটে বাহিনীকে শান্তিকালীন সময়ের অবস্থানে নেওয়া এবং ইউক্রেইনে আরও হস্তক্ষেপ ও দেশটিকে অস্থিতিশীল করা থেকে বিরত থাকবে কিনা,” ভাষ্য ব্লিনকেনের। 

তার সঙ্গে বৈঠকের আগে ল্যাভরভ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মস্কো কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত।

“আমরা, যেমন প্রেসিডেন্ট পুতিনও বলেছেন, কোনো ধরনের সংঘাত চাই না,” বলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইউক্রেইন বলছে, রাশিয়া তাদের সীমান্তের কাছে ৯০ হাজারের বেশি সৈন্য জড়ো করেছে।

অন্যদিকে কিয়েভও সীমান্তে সৈন্য বাড়াচ্ছে বলে দাবি মস্কোর।

ক্রেমলিন বলছে, ইউক্রেইনের ওপর রুশ হামলা নিয়ে যেসব জল্পনা-কল্পনা চলছে তা ভিত্তিহীন; নিজেদের ভূখণ্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী যত খুশি তত সৈন্য সমাবেশের অধিকার রাশিয়ার রয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

প্রতিবেশী দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেইন একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দুটি প্রজাতন্ত্র ছিল। ১৯৯১ সালে ইউনিয়নটি ভেঙে পড়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তসহ নানান বিষয়ে জটিলতা বাড়তে থাকে।

ইউক্রেইন এখন নেটোতে ঢুকতে চাইছে, যা রাশিয়ার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউক্রেইন সীমান্তে সাম্প্রতিক সংকটের শুরু থেকেই রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ইউক্রেইনকে নেটোর সদস্য করা হবে না এবং দেশটিতে রাশিয়াকে ‘টার্গেট’ করে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা বসানো হবে না এমন আইনি নিশ্চয়তা চাইছে।

“আমাদের কথা শোনা হবে, এমনটা নিশ্চিত করবো আমরা। মূল বিষয় হচ্ছে আমাদের নিরাপত্তা,” ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ল্যাভরভ।

“আর যদি নেটো এই বিষয়ে আলোচনা করতে বা আইনি নিশ্চয়তা দিতে কিংবা প্রেসিডেন্ট পুতিন যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন তা নিয়ে আলোচনায় অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে অবশ্যই আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেবো। আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা কারও ওপর নির্ভর করে না,” বলেছেন তিনি।