আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার খবর এবং শেষ মুহূর্তে সতর্কতা জারির পরও দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানরা তাতে কানই দেয়নি। বিস্ফোরণও ঘটেছে বিমানবন্দরের অ্যাবি গেটের কাছে, যেখানে ছিল হাজারো আফগানের জটলা।
Published : 27 Aug 2021, 12:42 AM
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ব্যাটেলিয়নের সাবেক কমান্ডার কর্নেল কোল জ্যাসন এরকম আরও হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।
কাবুল বিমানবন্দর জঙ্গি হামলা বিশেষত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস সেখানে হামলা চালাতে পারে বলে কয়েকটি দেশ সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিল গত কয়েক দিন ধরেই।
বিশ্লেষকদের ধারণা, বৃহস্পতিবারের এই হামলা খুব সম্ভবত ঘটিয়েছে ইসলামিক স্টেটের আফগান শাখা ‘আইসিস-কে’।
মার্কিন কর্নেল জ্যাসন বলেন, ‘আইসিস-কে’ বিমানবন্দর থেকে লোকজনকে সরানোর সুযোগে আবার হামলা চালানোর চেষ্টা ‘অবশ্যই’ নেবে বলেই তিনি মনে করেন।
“তারা সম্পদ পেয়ে গেছে, কব্জায় পৌঁছে গেছে, এমনকী নিশানাও পেয়ে গেছে- আর তা হচ্ছে, মরিয়া হয়ে থাকা অরক্ষিত মানুষজনের ভিড়,” বলেন জ্যাসন।
গত বুধবার কাবুল বিমানবন্দর সন্ত্রাসী হামলার ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলতে বলেছিল। বিমানবন্দরের কাছের লোকজনদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া বিমানবন্দরে সতর্কতাও জারি করেছিল।
এই সতর্কবার্তার মধ্যে যুক্তরাজ্যের আর্মড ফোর্সেস বিভাগের জুনিয়র মন্ত্রী জেমস হিপি বৃহস্পতিবারও বিবিসি রেডিও ফোরকে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে মারাত্মক হামলার চেষ্টা হতে পারে বলে ‘খুবই বিশ্বাসযোগ্য‘ খবর আছে তার কাছে। তিনি বলেছিলেন, সম্ভবত কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেরকম কিছু ঘটতে পারে।
কিন্তু এতসব সতর্কবার্তায় কান না দিয়ে বিমানবন্দরের প্রবেশপথগুলোতেই থেকে যায় দেশ ছাড়ার আশায় জড়ো হওয়া আফগানরা। তারা এতটাই মরিয়া যে, এই ধরনের হামলার আশঙ্কার খবরে মন দেওয়ার সময় তাদের নেই। তারা হরহামেশাই নানা গুজব শুনছে। তাই এসবে কান না দিয়ে তারা দেশ ছাড়ার চেষ্টাতেই লেগে আছে।
অনেক আফগানই হয়ত অনেক দুর্ভোগ সয়ে, বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে বিমানবন্দরে আসতে পেরেছে। আবার অনেকেই বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিমানবন্দরে আস্তানা গেড়েছে। তাই হামলার হুমকি নিয়ে সতর্কতা তাদের কাছে বাস্তবিক কিছু মনে হয়নি এবং দেশ ছাড়ার চেষ্টাতেও তারা ক্ষ্যান্ত দেয়নি।
আর এবি গেটের কাছে দু’ দুটো বোমা হামলাই বেছে বেছে মানুষজনের ভিড়ের মধ্যেই হয়েছে। একারণে হতাহতের সংখ্যাটাও বেশি হয়েছে। যার মধ্যে আছে মার্কিনি এবং অন্যান্য সাধারণ মানুষও, বলেছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি।
আফগানিস্তানের টোলো নিউজের খবরেও ভিড়ের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটানোর কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যায়ের্স অ্যান্ড ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্যাটেজি কমিটির সদস্য অ্যালিসিয়া কেয়ার্নস বলেছেন, ব্যারন হোটেলের বাইরে বিস্ফোরণের ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের পাশাপাশি আফগানদের মধ্যে কাদের সরিয়ে নেওয়া হবে, তা বাছাইয়ের কাজ চলছে ওই হোটেলে।
এই কনজারভেটিভ এমপি এক টুইটে জানিয়েছেন, ওই হোটেলের উত্তর গেইটের কাছে বোমা হামলার পাশাপাশি গুলিও চালানো হয়েছে।