কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে সংবিধানের বিলুপ্ত ধারা ভারত পুনর্বহালের পরিকল্পনা দিলে দেশটির সঙ্গে আবারও পাকিস্তান আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত প্রস্তত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
Published : 05 Jun 2021, 09:21 AM
ইসলামাদে সরকারি বাসভবনে ইমরান খান শুক্রবার রয়টার্সকে বলেন, “যদি একটি রোডম্যাপ থাকে, তাহলে, হ্যাঁ, আমরা আলোচনা করব।”
ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরপরই কাশ্মীর রাজ্যটি নিয়ে বিরোধে জড়ায় ভারত ও পাকিস্তান। উভয় দেশই হিমালয়ের ওই পুরো অঞ্চলটিকে নিজের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। কিন্তু এর কিছু অংশ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে এবং কিছু অংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০১৯ সালে ভারতের কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার বিলুপ্ত করে সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে সেদেশের সরকার। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করে পাকিস্তান।
এর আগে ইমরান খানের সরকারের দাবি ছিল, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কোনো প্রক্রিয়া শুরুর আগে ভারতকে কাশ্মীর নিয়ে তার ২০১৯ সালের পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে হবে।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলকে জাতিসংঘের ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, “এমনকি তারা যদি আমাদেরকে একটি রোডম্যাপও দেয় যে কাশ্মীরের মর্যাদা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে।”
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানতে পারেনি রয়টার্স।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদাহরণ টেনে ইমরান খান বলেন, তিনি সবসময়ই ভারতের সঙ্গে একটি ‘সভ্য’ ও ‘খোলামেলা’ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
“আপনি যদি দক্ষিণ এশিয়ায় দারিদ্র্য দূর করতে চান, সবচেয়ে ভালো পথ হচ্ছে পরস্পরের সঙ্গে বাণিজ্য করা।”
মার্চে পাকিস্তানের অর্থনীতি বিষয়ক শীর্ষ সিদ্ধান্ত-গ্রহণকারী পর্ষদ ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু করার সিদ্ধান্ত জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত কাশ্মীরের বিষয়ে তাদের অবস্থান না বদলাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত।
এ ব্যাপারে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে ভারত সীমা অতিক্রম করেছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা শুরুর আগে তাদের পূর্বের অবস্থানে ফিরতে হবে। এ মুহূর্তে ভারতের পক্ষ থেকে কোন প্রত্যুত্তর দেওয়া হয়নি।”
দুই দেশের সরকারের পক্ষ থেকেই এ বছরের শুরুতে একটি পর্দার আড়ালের কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়, যার লক্ষ্য হচ্ছে সামনের কয়েক মাসের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য রোডম্যাপ দাঁড় করানো।