মিয়ানমার: শঙ্কার রাতের পর ফের মিছিলে লাখো মানুষ

মিয়ানমারের শহরগুলোতে নবম দিনের মতো সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদে লাখো মানুষ যোগ দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2021, 10:32 AM
Updated : 14 Feb 2021, 10:32 AM

রোববারের এই সকালের আগের রাতটি শঙ্কায় কেটেছে দেশটির বাসিন্দাদের, কারণ শনিবার রাতে গণবিক্ষোভের সুপরিচিত সমর্থকদের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়ে রাতে বাড়িতে কোনো অতিথি এলে কর্তৃপক্ষকে সে বিষয়ে জানানোর একটি আইন ফের চালু করে সামরিক জান্তা।

এতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো আদালতের অনুমতি ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কাউকে গ্রেপ্তার ও নাগরিকদের বাড়ি তল্লাশির অনুমোদন পায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রোববার প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা সাদা পোশাক পরে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনের কেন্দ্রস্থল দিয়ে মিছিল করে যায়। এ সময় তাদের হাতে দেশটির সাবেক নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি চেয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছিল।

১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সরকারকে উচ্ছেদ করে নেত্রী সু চি ও অপর শীর্ষ নেতাদের আটক করে।

এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে রাজপথের সবচেয়ে বড় প্রতিবাদগুলোর কারণে ইয়াঙ্গনের সড়কপথে চলাচলকারী বাসগুলো ধীরে ধীরে এগিয়েছে, প্রতিবাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হর্নও বাজিয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

এখানে অনেক প্রতিবাদকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে লেখা ‘রাতে লোকজনকে অপহরণ করা বন্ধ করুন’ প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন।

মোটরসাইকেল ও গাড়ির একটি প্রতিবাদ মিছিল রাজধানী নেপিডোর সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর দাউইয়ে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে প্রতিবাদকারীরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছায়ায় দাঁড়ানো একটি ব্যান্ড ড্রাম বাজায়।

উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে ইরাবতী নদীর তীরবর্তী শহর ওয়াইমাওয়ে লোকজন পতাকা বহন করে ও বিপ্লবী গান গেয়ে প্রতিবাদ জানায়।

দেশটির বহু জায়গায় প্রতিবাদকারীদের হাতে সু চির ছবি ছিল। ওয়াকিটকি আমদানির যে অভিযোগে তাকে আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে সোমবার তার মেয়াদ শেষ হবে। এরপর কী হবে তা জানতে সু চির আইনজীবী খিন মং জ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।  

সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৮৪ জনেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী ‘অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার’ জানিয়েছে। এদের অধিকাংশকেই রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠী ‘বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে’র কর্মী ওয়াই হানিন পুইন্ট থন টুইটারে বলেছেন, “যখন বিশ্ব সম্প্রদায় সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা করছে তখন মিন অং হ্লাইং ভয় ও অস্থিরতা উস্কে দেওয়ার প্রত্যেকটি উপায় ব্যবহার করছেন।”

শুক্রবার সামরিক জান্তা ২৩ হাজার বন্দির সাজা মওকুফ করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে অপরাধীদের মুক্তির সম্ভাবনায় মিয়ানমারজুড়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা মুক্তি পেলে অপরাধ তৎপরতার বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির বাসিন্দারা।