নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা বাতিলের আহ্বান জানিয়ে রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
Published : 29 Dec 2020, 10:50 PM
প্রধানমন্ত্রী ওলি গত ২০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এর প্রেক্ষিতে পরদিন প্রেসিডেন্ট ভাণ্ডারি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী বছর ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে দুই পর্যায়ে ভোট গ্রহণের সূচি নির্ধারণ করেন।
কিন্তু নেপালের সংবিধানে মন্ত্রিসভার সুপারিশের ভিত্তিতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি না থাকায় ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে এক ডজনের উপরে পিটিশন ফাইল হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে ওইসব পিটিশনের শুনানি চলবে।
২০২২ সালে নেপালের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবারের বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ওলি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা অসাংবিধানিক।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে জনসমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও বিক্ষোভকারীরা এদিন তা উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার অন্তত ১০ হাজার মানুষ সড়কে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। ওলি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর এটিই দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ।
ওলির অভিযোগ, অভ্যন্তরীন কোন্দল এবং দলীয় নেতাদের তার প্রতি অসহযোগিতামূলক মনোভাবের কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই তিনি নতুন করে নির্বাচনের ডাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ওলির উপদেষ্টা রাজন ভট্টরাই বলেছিলেন, দলের ভেতর চাপে পড়েই প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ওলিকে দলের প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে বলেছিল বলেও জানান তিনি।
“তাই তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গণতন্ত্রে এটাই সবচেয়ে সেরা উপায়,” বলেন তিনি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তা মানতে নারাজ।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ১৯ বছরের শিক্ষার্থী রাজেশ থাপা বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তাই তার উচিত হবে দ্রুত নিজের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলা।”
নেপালের সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে গড়া জোটের নেতৃত্ব দিয়ে ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পেয়ে ক্ষমতায় আসেন ওলি। কিন্তু নিজ দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে এড়িয়ে ঘনিষ্ঠ একটি উপদলকে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় দলের মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।