নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলার আগে নিরাপত্তাজনিত বেশ কিছু ব্যর্থতার দিক ছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিযুক্ত তদন্ত দল, কিন্তু এসব সত্ত্বেও শোচনীয় এ ঘটনাটি এড়ানো যেত না বলে সিদ্ধান্ত টেনেছে তারা।
Published : 08 Dec 2020, 10:25 AM
বিবিসি জানিয়েছে, অস্ট্রেলীয় শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট ২০১৯ সালের মার্চে ওই দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করার পর এই তদন্ত শুরু করা হয়েছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউ জিল্যান্ডের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ‘প্রায় একচেটিয়াভাবে’ ইসলামি সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবেলার ওপর জোর দিয়েছিল আর কর্তৃপক্ষের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পরীক্ষা করার বিষয়টি অবহেলা করার সুযোগে ট্যারেন্ট প্রচুর অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলেছিলেন।
তবে এসব ব্যর্থতা সংশোধন করার পরও ওই বর্ণবাদীকে আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখা যেত না বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে
চলতি বছরের অগাস্টে ২৯ বছর বয়সী ট্যারেন্টকে প্যারোলে মুক্তির সুযোগ না রেখে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত, যা নিউ জিল্যান্ডের আইনে সর্বোচ্চ সাজা।
রয়াল কমিশন অব ইনকোয়ারির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক বিবৃতিতে নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আডার্ন বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদীর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি শনাক্ত করতে পারত, সরকারি সংস্থাগুলোর এমন কোনো ব্যর্থতা খুঁজে পায়নি কমিশন। কিন্তু তারা শেখার মতো বহু বিষয় এবং পরিবর্তন করার মতো উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে।”
তিনি ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সের পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্যর্থতা’ ও ইসলামপন্থিদের হুমকির দিকে ‘অতিরিক্ত নজর’ দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করে বলেন, “এই ইস্যুগুলো হামলাটি থামাতে পারতো, কমিশন এমন কিছু খুঁজে না পেলেও, এগুলো ব্যর্থতাই ছিল আর এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”
তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে এবং সেগুলোর সবই তারা গ্রহণ করেছে বলে সরকার জানিয়েছে। এগুলোর মধ্যে নতুন একটি জাতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা গঠন করা এবং ঘৃণাজনিত অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত।
এর পাশপাশি নিউ জিল্যান্ড সরকার একটি ‘নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়’ মন্ত্রণালয় তৈরি ও নৃগোষ্ঠীগুলোর জন্য গ্রাজুয়েট কর্মসূচী চালু করার পরিকল্পনা পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।