ইথিওপিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত ফেডারেল রাজ্য তিগ্রাইয়ের বিভিন্ন অংশে সংঘর্ষ, বোমাবর্ষণ ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটছে বলে উত্তরাঞ্চলীয় অঞ্চলটির একটি বিদ্রোহী বাহিনী জানিয়েছে।
Published : 06 Dec 2020, 12:32 PM
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই এ বিদ্রোহী বাহিনীটির নেতাদের ধরা হবে, ইথিওপীয় সরকার এমন ঘোষণা দেওয়ার পর শনিবার বাহিনীটি এসব কথা জানায়।
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের ফেডারেল বাহিনী ও তিগ্রাই পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) এক মাসের যুদ্ধে কয়েক হাজার লোক নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৪৬ হাজার শরণার্থী প্রতিবেশী সুদানে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিগ্রাইয়ের রাজধানী মেকেল্লের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার এক সপ্তাহ পর আবি সরকার বলছে, লড়াই শেষ হয়ে আসছে।
কিন্তু টিপিএলএফ নেতা দেব্রেতশন জেব্রেমিশায়েল শনিবার একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মেকেল্লের বাইরে এখনও দুইপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে।
শুক্রবার ফেডারেল বাহিনীগুলো আব্বি আদি শহরে বোমাবর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি, তবে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি। সরকারি বাহিনীগুলো মেকেল্লেতে লুটপাট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন টিপিএলএফের একজন মুখপাত্র।
মুখপাত্র গেতাচেউ রেডা টিপিএলএফের মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশনকে বলেছেন, “(তারা) বেসামরিক সম্পত্তি ও হোটেল লুটপাট চালাচ্ছে, কারাখানাগুলোতে লুটপাট চালানোর পর সেগুলোর ক্ষতিসাধন করছে।”
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি সরকার। তিগ্রাইয়ের অধিকাংশ যোগায়োগ বন্ধ থাকায় ও এলাকাটিতে প্রবেশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় দু’পক্ষের বক্তব্য যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
আবি টিপিএলএফের সাবেক রাজনৈতিক অংশীদার। তাদের জোট প্রায় তিন দশক ধরে ইথিওপিয়ার ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তিগ্রাইয়ের কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করে সাবেক মিত্রদের বিরাগভাজন হন আবি।
তিগ্রাইয়ের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিযোগ করে টিপিএলএফ। আবি ইথিপিয়ার ১০টি আধা-স্বায়ত্তাশাসিত ফেডারেল রাজ্যের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করতেই এসব করছেন বলে বলে অভিযোগ করে তারা।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে টিপিএলএফের নেতাদের অপরাধী বলে অভিহিত করে তারা ফেডারেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন আবি।
শুক্রবার রাতে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর কর্নেল শামবেল বেয়েনে জানিয়েছিলেন, গোরে এলাকার একটি বনে দেব্রেতশন, গেতাচেউসহ টিপিএলএফের অন্যান্য নেতারা লুকিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, সরকারি বাহিনী সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আছে।
“তাদের কাছে যেতে আর কয়েকদিন লাগবে আমাদের,” রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে বলেছিলেন তিনি।