বাইডেনের জয় মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত মিশিগানের রিপাবলিকানদের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশিগানে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের জয়কে উল্টে দিতে চান না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সেখানকার প্রভাবশালী দুই রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2020, 12:44 PM
Updated : 21 Nov 2020, 12:44 PM

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠক শেষে মধ্যপশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যের সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের নেতা মাইক শারকি ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার লি চ্যাটফিল্ড ৩ নভেম্বরের ভোটের বৈধতা দানে ‘স্বাভাবিক প্রক্রিয়া’ অনুসরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মিশিগানে দলীয় আইনপ্রণেতাদের এমন অবস্থান ‘নির্বাচনে কারচুপির’ অভিযোগ আনা ট্রাম্পের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবার জর্জিয়ার কর্মকর্তারা তাদের রাজ্যে বাইডেনের জয়ের প্রত্যয়ন দিয়েছেন। দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় এ রাজ্যটি রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও ডেমোক্র্যাট বাইডেন এখানে সামান্য ভোটের ব্যবধানে ডনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।

যে পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঠিক হয়, সেই ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে ৫০টি রাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া মোট ৫৩৮টি ভোটের মধ্যে ডেমোক্র্যাট বাইডেন ৩০৬টি পেতে যাচ্ছেন বলে গণনাকৃত ভোটের ধারা বলছে। পপুলার ভোটেও তার সঙ্গে রিপাবলিকান ট্রাম্পের ব্যবধান প্রায় ৬০ লাখ।

৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে হাতেগোণা মাত্র কয়েকবার প্রকাশ্যে আসা ট্রাম্প শুক্রবার ফের ভোটে তিনিই জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

“আমিই জিতেছি, যাই হোক,” ওষুধের মূল্য সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দিতে গিয়ে বলেছেন তিনি।

নির্বাচনের দিন থেকেই মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করে আসছেন; যদিও এর সপক্ষে তিনি শক্ত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।

বিভিন্ন রাজ্যে ভোটের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতেও গিয়েছেন রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট, তবে এখন পর্যন্ত সেখানেও উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা পাননি তিনি।

তার শিবিরের কর্মকর্তারা এখন কয়েকটি রাজ্যে ভোটের ফলের বৈধতা দান আটকাতে চেষ্টা করছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ ওই রাজ্যগুলোর আইনসভা রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সেসব আইনসভা গণনাকৃত ভোটের ফলকে বৈধতা না দিয়ে ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করবে বলে আশা প্রেসিডেন্টের প্রচার শিবিরের।

ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ট্রাম্প আগামী কয়েকদিনের ভেতর পেনসিলভেইনিয়ার আইনপ্রণেতাদেরও হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন বলে তার প্রচার শিবিরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন। পেনসিলভেইনিয়াতেও ট্রাম্প বাইডেনের কাছে হেরেছেন।

বিবিসি লিখেছে, ট্রাম্প শিবির যদি মিশিগান ও পেনসিলভেইনিয়ায় আইনসভার মাধ্যমে ভোটের ফল উল্টে দিতে পারেও, তারপরও পরিস্থিতির হেরফের হবে না। ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বাইডেনকে হারাতে ট্রাম্পের তখন অন্তত আরও একটি রাজ্যের ভোটের ফল পাল্টে দিতে হবে।

শুক্রবার মিশিগানের রিপাবলিকান নেতা শারকি ও চ্যাটফিল্ড ভোটের ফল পাল্টে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, হোয়াইট হাউসের বৈঠকে মূলত কোভিড-১৯ সহযোগিতা সংক্রান্ত আলোচনাতেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে ট্রাম্পের চেষ্টা নিয়ে নয়।

হোয়াইট হাউস এর আগে জানিয়েছিল, মিশিগানের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের এ বৈঠক বিভিন্ন রাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তার নিয়মিত বৈঠকেরই অংশ। যদিও নির্বাচনের পর থেকে প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের বৈঠক করতে খুব বেশি দেখা যায়নি।

হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে শারকি ও চ্যাটফিল্ড বলেন, “আমরা এমন কোনো তথ্য সম্বন্ধে এখনো জানি না যা মিশিগানের ভোটের ফল পাল্টে দিতে পারে; আইনসভার নেতা হিসেবে আমরা আইন ও মিশিগানের ইলেকটর বাছাইয়ের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করবো। যেমনটা আমরা পুরো নির্বাচনজুড়েই বলেছি।”