যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বাবার থেকে কোনও অংশে কম যান না। নির্বাচনকে সামনে রেখে রিপাবলিকান পার্টি কনভেনশনের প্রথম রাতেই জ্বালাময়ী বক্তব্যে মঞ্চের মধ্যমনি হয়ে জাতির মনোযোগ কেড়েছেন তিনি।ছাপিয়ে গেছেন তার বাবাকেও।
Published : 26 Aug 2020, 01:05 AM
নির্বাচনের আগে দিয়ে সমর্থকদের চাঙ্গা করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনসমর্থনের ভিত মজবুত করা এবং তাকে আবারও জেতাতে নির্বাচনী প্রচারে গতি আনার চেষ্টায় রিপাবলিকানদের চোখে এখন তুরুপের তাস হয়ে উঠেছেন জুনিয়র ট্রাম্প।
সোমবারের রিপাবলিকান সম্মেলনে তিনি যেভাবে তার বাবার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন এবং প্রতিপক্ষ জো বাইডেনকে ঘায়েল করেছেন- তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়েও বেশি প্রেসিডেন্টসুলভ, বলছে বিবিসি।
সম্মেলনে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বাবার নেতৃত্বের প্রশংসায় বলেছেন, “অর্থনীতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি রকেটের জ্বালানির মতো।”
এছাড়ও, বক্তব্যে ট্রাম্প জুনিয়র বাবাকে চিত্রিত করেছেন একজন রাষ্ট্রনায়ক, জাতির জন্য উদ্দীপনাময় এবং উদারনৈতিক এক শক্তি, কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের বন্ধু এবং আমেরিকানদের মূল্যবোধে কোনওরকম আঘাতের বিরুদ্ধে এক সুরক্ষিত ঢাল হিসাবে।
বক্সিংয়ের রিংয়ে তেজোদ্দীপ্ত এক বক্সারের মতো এবং হাত নেড়ে বেশ সপ্রতিভ ভঙ্গিতে কথা বলে গেছেন ট্রাম্পপুত্র। তার বক্তব্যের বেশিরভাগ জুড়েই ছিল ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের সমালোচনা।
দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, “বাইডেনের বামপন্থি নীতি দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া স্তব্ধ করে দেবে।” বাবা ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকায় জনগণ যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে ডেমোক্র্যাটরা এলে সে সবকিছু বরবাদ হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, “বাইডেন আপনার পকেটের অর্থ বের করে নিয়ে তা জলাভূমিতে জলাঞ্জলী দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন।” জো বাইডেনকে জলাভূমিতে ওৎ পেতে থাকা এক পৌরাণিক দানবের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নির্বাচনে ফের জেতাতে যা যা সম্ভব সবই করছেন তার ছেলে। নির্বাচনের এই আসন্ন সময়ে রিপাবলিকানরা মূলত প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের উজ্জবীত করার দিকেই মনোনিবেশ করেছেন। একাজে তরুণ ট্রাম্পপুত্রেই ভরসা দেখছেন তারা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থকদের অনেকের সঙ্গেই ট্রাম্প জুনিয়রের চোখে পড়ার মতো সৌহার্দ্য আছে। যাদের বেশির ভাগেরই বাস দেশের পল্লী অঞ্চলে। তাই ট্রাম্পের এই ভিত শক্ত করতে তার ছেলেকেই সেতুবন্ধন হিসাবে দেখা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের এই সমর্থকদের অনেকেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে জুনিয়র ট্রাম্প তার বাবাকেও ছাপিয়ে গিয়ে যা করেছেন- সেই ধারা পছন্দ করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়: বন্দুকের সাইলেন্সারের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য অস্ত্রশিল্প সংশ্লিষ্টদের চেষ্টায় জুনিয়র টাম্পের সমর্থন।
নির্ভীকতার জন্যও প্রশংসিত ট্রাম্প জুনিয়র। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাবার সঙ্গে তার মিলও আছে। প্রেসিডেন্টের মতোই বিভক্তি দেখা গেছে তার ক্ষেত্রেও। তার বক্তব্যে প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা যেমন উচ্ছ্বসিত হয়েছে, তেমনই পশ্চাদপসরণশীল হয়েছেন উদারনৈতিকরা।
নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাটিক পরিকল্পনাবিদ জন রেইনিশ জুনিয়র ট্রাম্পকে ‘বয়সে তরুণ এবং তার বাবার চেয়ে আরও বেশি বা ক্ষুরধার’ বলে বর্ণনা করেছেন। তার কথায়, “ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র হচ্ছেন জ্বলন্ত গ্যাসোলিন।”