বিচার ও স্বভূমে ফেরার অপেক্ষায় রোহিঙ্গাদের ৩ বছর

সেনা নিপীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার তিন বছরেও রোহিঙ্গাকে নিরাপদে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেনি মিয়ানমার; নৃশংসতার বিচার ও মাতৃভূমিতে ফেরার অপেক্ষা ফুরোয়নি ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2020, 09:54 AM
Updated : 25 August 2020, 10:33 AM

রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মানসে ২০১৭ সালের এই দিনে দেশটির রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালানো শুরু করে। সামরিক জান্তার বর্বর নির্যাতনের মুখে এর পর থেকে সোয়া সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে নিপীড়নের মুখে অনেক আগে আশ্রয় নিয়েছে আরও ৩ থেকে পাঁচ লাখ মানুষ।

তিন বছর আগে সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে জাতিসংঘ বর্ণনা করে আসছে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে। তবে সেখানে গণহারে হত্যা-ধর্ষণ-জ্বালাওপোড়াওয়ের অভিযোগ মিয়ানমার অস্বীকার করে আসছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার প্রস্তুত থাকার কথা বলে আসলেও তাদের কথায় রোহিঙ্গারা আস্থা রাখতে না পারার কারণে দুই দফা প্রত্যাবাসনের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।

ছবি: রয়টার্স

রোহিঙ্গাদের দাবি, প্রত্যাবাসনের জন্য আগে তাদের নাগরিকত্ব; জমি-জমা ও ভিটেমাটির দখল ফেরত দেওয়া ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে রাখাইনে তাদের জনগোষ্ঠীকে হত্যার ও সম্পদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এসবের কোনোটির বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না নিয়েই মিয়ানমার তাদের বাছাই করা তালিকার ভিত্তিতে গত বছর কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চাইলেও রোহিঙ্গারা রাজি হয়নি। এ জন্য মিয়ানমার উল্টো বাংলাদেশকে দুষছে।

রোহিঙ্গা নির্মূল অভিযানের তিন বছর পূর্তির দিনে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, মিয়ানমার সরকারকে স্বীকার করতে হবে যে, তারা রোহিঙ্গাদের যে অসহনীয় দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছেন, তা এমনকি এই বৈশ্বিক মহামারীতেও তার সামান্যতম লাঘব নেই।

“আন্তর্জাতিক সমাধান মেনে নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা মিয়ানমারকে নিতে হবে। অন্যদিনে লাখো শরণার্থীর ভারে ন্ব্যুজ হলেও নিরাশ্রয় এসব মানুষের জন্য কোনো রকম বৈরী পরিবেশ তৈরি করা বাংলাদেশের উচিত হবে না।”

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) গত জানুয়ারিতে মিয়ানমারে গণহত্যা ঠেকাতে সাময়িক পদক্ষেপ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশন দেশটি লঙ্ঘন করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে।

ছবি: রয়টার্স

গত বছর নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বাধ্যতামূলক নির্বাসন ও তাদের উপর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।

তবে মিয়ানমার এসব আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার অনুকূলে ছিল না; দেশের ভেতরে মারাত্মক অপরাধের তদন্তও করতে দেয়নি জাতিসংঘকে; অথবা সেনা নৃশংসতার বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য কোনো ফৌজদারি তদন্ত চালায়নি।

বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলেছে, এখনে রাখাইনে যে ৬ লাখ রোহিঙ্গা আছেন তারা চরম নিযাতন ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যেখানে চলাচলের বা মৌলিক কোনো অধিকারই নেই। কেউ কেউ সাগরে কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে আটকা পড়ে আছেন, তার বাইরে শত শত মানুষ নৌকায় মারা গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ এর অজুহাত দেখিয়ে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড বেআইনিভাবে তাদের দেশে ঢুকতে দেয়নি।  

মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আটক করলেও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থাকে তাদের কাছে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে অনেকের বিচারও করছে।

এদিকে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েও সাগরে উদ্ধার হওয়ার পর ভাসানচরে আটক থাকা ৩০০ রোহিঙ্গার কাছে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের যেতে দেওয়া হয়নি।

মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তথ্য ও চলাচলের অধিকারের ক্ষেত্রে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার সুযোগের কড়াকড়ির মধ্যে রয়েছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর হাতের খুন হচ্ছেন।

মিয়ানমারে মারাত্মক হুমকিতে অধিকার

রোহিঙ্গাদের উপর সীমাহীন নিপীড়নের মূল কারণ নির্মূলে ব্যর্থ মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক উপায়ে ও স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার মতো প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করবে না বলে দিয়েছে।   

আবদুল হামিদ নামে এক শরণার্থী এইচআরডব্লিউকে বলেন, “কীভাবে হাজারে হাজারে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তা আমরা দেখেছি। তুলা তোলি নদীতে সারি সারি লাশ ভাসতে দেখেছি, কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।”

মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, তাদের সঙ্গে যেসব শরণার্থীর কথা হয়েছে, তাদের সবাই মিয়ানমারে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে চান। কিন্তু তার জন্য পযাপ্ত নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতা চান তারা। একইসঙ্গে বর্বরতার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও রয়েছে তাদের।

শেরু হাতু নামে এক শরণার্থী বলেন, “আমার অবশ্যই আমাদের দেশে ফিরতে চাই, আমাদের জমি-জিরাত ও গবাদিপশুর খোঁজ নিতে চাই। কিন্তু বিচার না পেলে তো সেটা সম্ভব না।”

গত বছর সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারে জাতিসংঘের স্বাধীন তথ্যানুসন্ধানী মিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশিটিতে থাকা ৬ লাখ রোহিঙ্গা ‘আগের চেয়েও গণহত্যার মারাত্মক বড় হুমকির’ মুখে রয়েছে।

ছবি: রয়টার্স

রাখাইন রাজ্যে এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রয়েছেন রোহিঙ্গারা। শিবিরে আটকে থাকা তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই এবং পর্যাপ্ত খাবার, চিকিত্সা সেবা, শিক্ষা এবং জীবিকা নির্বাহের সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত।

মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের অধীনে তাদের বাতিল করা হয়েছে। তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করার পাশপাশি চলমান নিপীড়নের মুখে আরও নাজুক করে রাখা হয়েছে।

গত জানুয়ারিতে আইসিজের সর্বসম্মত রায়ে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে ও অপরাধের প্রমাণ সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার আইনত বাধ্য। তবে মিয়ানমার সরকার এই আদালতের আদেশ মেনে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

এইচআরডব্লিউ বলছে, আদালতের আদেশ মানতে ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে প্রথমেই আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করতে হবে। সেসঙ্গে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ এবং বৈষম্যমূলক আইন ও স্থানীয় বিধি প্রত্যাহার করতে হবে এবং নির্বিচার অবরোধ ও চাঁদাবাজির মতো রোহিঙ্গাদের চলাচল ও জীবিকা নির্বাহে বাধা সৃষ্টি করে এমনসব সরকারি-বেসরকারি আচরণ বন্ধ করতে হবে।

সরকার রাখাইন রাজ্যে আটটি জনপদ ও প্রতিবেশী চিন রাজ্যের একটিতে মোবাইল ইন্টারনেট যোগাযোগের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর ফলে সেখানে মানবিক সহায়তার সরবরাহ কঠিন হয়ে উঠেছে এবং সাধারণ মানুষকে তথ্য থেকে বঞ্চিত করেছে। জাতিসংঘ ও মানবিক গোষ্ঠীগুলিকে রাখাইন রাজ্যে অবাধ ও টেকসই সুযোগ দেয়নি সরকার। এর এসব জাতিগোষ্ঠীর অভাবের বোঝা আরও বাড়ছে।

“বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকবার প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। কারণ শরণার্থীরা এভাবে ফিরতে চায় না। মিয়ানমারে গিয়ে নিধন ও নির্যাতনের আশঙ্কা তাদের। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও স্বেচ্ছায়, নিরাপদে রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত নয় “

সাদেক হোসেন নামে এক শরণার্থী বলেন, “আমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। তবে সেটা কেবল তখনই সম্ভব যখন সেখানে আমাদের অধিকার দেওয়া হবে।”

শামীমা নামে আরেকজন বললেন, “আমরা কেবল তখনই ঘরে ফিরতে পারব, যখন আমরা অত্যাচারের পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা পাব।”

ছবি: নিশ সিদ্দিকী / রয়টার্স

‘অবস্থার অবনতি’ বাংলাদেশে

অত্যাচার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য সীমানা খুলে দিয়ে বাংলাদেশ প্রশংসিত হলেও গত একবছরে সরকারের নীতি শরণার্থীদের জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করে এইচআরডব্লিউ।

প্রায় এক বছর আগে কুতুপালং শিবিরে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে সচেতনতা দিবস’ উদযাপনে ‘শান্তিপূর্ণ’ এক মিছিলের পর সরকার শরণার্থী শিবিরগুলিতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। মোবাইল ফোন অপারেটরদের রোহিঙ্গাদের কাছে সিম কার্ড বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় এবং শরণার্থীদের কাছ থেকে হাজার হাজার সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করে।

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ‘ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখা’ বিরত থাকতে জতিসংঘ আহ্বান জানালেও বাংলাদেশ সরকার শিবিরগুলিতে সেই সুযোগ দেয়নি।

মানবিক সহায়তাকর্মীরা বলছেন, একারণের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ, ভাইরাস সম্পর্কে সময়োপযোগী ও সঠিক তথ্য দেওয়া এবং শিবিরগুলিতে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে নেওয়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলির মধ্যে দ্রুত সমন্বয় সাধনে তাদের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হওয়ায় শিবিরের বাইরে ও মিয়ানমারে অবস্থানরত আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে শরণার্থীদের যোগাযোগ কঠিন হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই বিস্তৃত বিধিনিষেধ প্রয়োজনীয় বা আনুপাতিক ছিল না।

মহামারী চলাকালে বাংলাদেশ সরকার শরণার্থী শিবিরগুলিতে মানবিক সেবা দেওয়ায় চরম কড়াকড়ি আরোপ করেছে এবং পারিবারিক সহিংসতা বাড়ার মধ্যেই লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়ে বেঁচে যাওয়াদেরসহ সলের সুরক্ষা সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ইন্টারনেট সুযোগ ছাড়া সহায়তা কর্মীরা দূরবর্তী অবস্থানে থেকে পরিষেবা সরবরাহ করতে পারছেন না।

জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার বিরোধিতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শরণার্থী শিবিরগুলির আশপাশে কাঁটাতারের বেড়া এবং পাহারা চৌকি নির্মাণ করছে।

এটাকে ‘শরণার্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, কাঁটাতারের বেড়া তাদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাওয়া বাধাগ্রস্ত করবে; জরুরি পরিস্থিতিতে পালিয়ে যাওয়া অসম্ভব করে তুলবে ও অন্যান্য শিবিরে স্বজনদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করবে বলে শরণার্থীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের পরিবারগুলি বলছে, ভাসানচরের দ্বীপে তাদের স্বজনরা চলাফেরার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত, সেখান তারা পর্যাপ্ত খাদ্য ও চিকিত্সা সেবার পাচ্ছে না এবং নিরাপদ পানীয় জলের সংকটে আছেন।

কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তারা ওই দ্বীপে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মারধর ও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। শরণার্থীকে জোর করে ভাসান চরে স্থানান্তরিত করা হবে না বলে ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সেখানকার শরণার্থীদের কক্সবাজারে এসে তাদের পরিবারের সাথে থাকতে দিতে দিতে রাজি হচ্ছে না সরকার।

বর্ষা মৌসুমে ভূমিধস ও বন্যা থেকে রক্ষায় কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরগুলিতে শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী কাঠামো তৈরি করার অনুমতি দিচ্ছে না সরকার। গত তিন বছর ধরে শিবিরগুলিতে সাড়ে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা শিশু প্রাথমিক শিক্ষা বঞ্চিত রয়েছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসান চর থেকে সরে নিতে বাংলাদেশকে চাপ দেওয়া এবং শরণার্থী শিবিরসহ দেশের অন্য কোথাও কার্যকর সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য সরকারকে সহায়তা করতে দাতা সংস্থাগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স।

অ্যাডামস বলেন, “তিন বছর আগে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিল। কিন্তু সরকার এখন শিবিরগুলিতে জীবনকে এতটাই অসহ্য করে তুলছে যাতে কোথাও নিরাপদ জায়গা না থাকলেও শরণার্থীরা সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়।

“শরণার্থীরদের শেষ অবধি ফিরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে লক্ষ্যাভিমুখী নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি সমর্থন বাড়াতে হবে আন্তর্জাতিক মহলকে।”