নতুন করে রেকর্ড করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের পর জাপানের রাজধানী টোকিওয় সতর্কতার মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।
Published : 15 Jul 2020, 11:09 PM
গভর্নর ইউরিকো কোইকে পরিস্থিতি অনেকটাই গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে কোইকে জনগণকে অপ্রয়োজনে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা এমন এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আমাদের জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সতর্কতা জারি করতেই হচ্ছে।”
‘‘আমি যা বুঝতে পারছি তাতে মনে হচ্ছে, এখন আমরা একটি গুরুতর পরিস্থিতিতে আছি।”
পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ তুলে ধরে তিনি বলেন, টোকিওয় ভাইরাস সংক্রমণ এখন চারটি মাত্রার সবচেয়ে উপরে ‘লাল’ এর পর্যায়ে আছে।
টোকিওতে তরুণদের মধ্যে সংক্রমণ এবং আক্রান্ত উপসর্গহীনদের সংখ্যা বাড়ছে বলে মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
করোনাভাইরাস মহামারীতে সারা বিশ্বে পর্যটন খাত প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ভ্রমণে উৎসাহ দিয়ে দেশের পর্যটন খাতকে বাঁচাতে জাপানের কেন্দ্রীয় সরকার ‘গো টু ট্র্যাভেল’ শীর্ষক প্রচার শুরু করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় আবার কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কায় সব মহল থেকে এই ভ্রমণ প্রকল্প স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, দেশের ভেতরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে টোকিওর মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেশি থাকা অঞ্চলগুলোতে মানুষের ঢোকা এবং বের হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যাপকমাত্রায় কমিউনিটি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জাপানের গ্রামাঞ্চলে করোনাভাইরাস এখনও সেভাবে ছড়ায়নি। তাই সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন রাজধানীর বাসিন্দাদেরকে গ্রামে থাকা তাদের বাবা-মা কিংবা অন্যান্য স্বজনদের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে।
সরকার ভ্রমণ প্রকল্পের কাজ চালিয়ে গেলে করোনাভাইরাস মহামারী জাপানে ‘মানুষ-সৃষ্ট দুর্যোগে’ পরিণত হবে বলে সতর্ক করেছেন মুৎসু নগরীর মেয়র।
তবে জাপানের অর্থমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরো বলেন, সরকার অত্যন্ত সতর্কভাবে এ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। ভ্রমণে মানুষকে উৎসাহ দিতে সরকার থেকে কেনাকাটা ও খাবারে নানা রকম ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
‘‘আমরা অবশ্যই আমাদের জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেব এবং সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখব।”
ভাইরাসের প্রকোপ:
জাপানে কেবল রাজধানী টোকিওই নয় অন্যান্য স্থানেও সংক্রমণ বাড়ছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় ওসাকায় বুধবার নতুন ৬১ জনের ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর দিয়েছে সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে।
২০ এপ্রিলের পর ওসাকায় এটিই একদিনে সবচেয়ে বেশি ভাইরাস সংক্রমণ। ওদিকে, টোকিওয় দৈনিক ভাইরাস সংক্রমণ গত সাতদিনের মধ্যে চারদিনেই ২০০ পার হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার টোকিওয় সংক্রমণের রেকর্ড দাঁড়ায় ২৪৩ জনে। বয়স ২০ থেকে ৩০ এর কোটায় থাকা মানুষদের মধ্যেই সংক্রমণ ঘটছে বেশি।
টোকিওর গভর্নর কোইকে মানুষজনকে রেস্টুরেন্টে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত সপ্তাহ থেকে করোনাভাইরাস রোগী দ্বিগুন বেড়ে যাওয়ার টোকিওর হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে।