জার্মানির রাজ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আবার লকডাউন

জার্মানির নর্থরাইন ভেস্টফেলিয়া রাজ্যে একটি মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কর্তৃপক্ষ আবার স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2020, 02:16 PM
Updated : 23 June 2020, 03:58 PM

গ্যুটার্সলো শহরের এ প্ল্যান্টটির ১৫শ’র বেশি কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আর্মিন লাশেট বলেছেন, করোনাভাইরাস ঠেকাতে ৩৬০,০০০ বাসিন্দার গ্যুটার্সলোয় ৩০ জুন পর্যন্ত বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।

এ পদক্ষেপকে ‘প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা’ বলে বর্ণনা করেছেন লাশেট। জার্মানি মে মাসে দেশব্যাপী লকডাউন তুলে নিতে শুরু করার পর এ রাজ্যেই আবার প্রথম বিধিনিষেধ ফিরছে।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে এ ভাইরাস সামাল দেওয়ায় জার্মানির সাফল্য প্রসংশা কুড়িয়েছিল। কিন্তু দেশটিতে আবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

গ্যুটার্সলোয় কী ঘটছে?

গ্যুটার্সলো শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমের মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে দেশের ‘সবচেয়ে বড় ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী আর্মিন লাশেট।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “সংক্রমণ ঠেকানোয় বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

লোকজনকে ওই এলাকা ছেড়ে যেতে নিষেধ করা হয়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে ‘অন্যান্য এলাকায় না যাওয়ার’ অনুরোধ করেছেন লাশেট।

তিনি জানান, বার, মিউজিয়াম, সিনেমাহল, জিম সব বন্ধ থাকবে। রেস্তোঁরাগুলো থেকে মানুষ কেবল খাবার নিয়ে যেতে পারবেন। কঠোর সামাজিক দূরত্ববিধিও আবার কার্যকর হচ্ছে। বন্ধ করা হয়েছে স্কুল এবং নার্সারিগুলো।

ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটা মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টের সব কর্মীর কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এইসব বিধিনিষেধ কার্যকর রাখতে ত্রাণকর্মীসহ তিনটি পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।

প্ল্যান্টের কর্মীরা যেসব আবাসিক ভবনে থাকেন সেখানে ধাতব বেষ্টনী দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ৭ হাজারেরও বেশি কর্মীকে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টে কাজ করে না এমন ২৪ জনের দেহে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন লাশেট।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ এলাকায় নিজস্বভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আছে। ফলে একেক অঞ্চলে নিয়মবিধি একেকরকম।

স্থানীয় পর্যায়ে কেবল গ্যুটার্সলোতেই নয়, লোয়ার সাক্সনি রাজ্যোর গ্যোটিঙ্গেন শহরেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইদুনা হাউজিং কমপ্লেক্সের এক জমায়েত থেকেই নতুন করে শুরু হয় সংক্রমণ৷

গুচ্ছ সংক্রমণ ধরা পড়ার পর গ্যোটিঙ্গেন শহরে একটি টাওয়ার ব্লক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাসিন্দাদের ঘরে রাখতে সেখানে গত শনিবার পুলিশও পাঠানো হয়েছে।

জার্মানির করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কেমন?

সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট এর প্রধান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়েছে। দেশ মহামারীর দ্বিতীয় পর্যায়ের ঝুঁকিতে আছে। তবে এর রাশ টেনে ধরা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের হিসাবমতে, জার্মানিতে করোনাভাইরাসের রিপ্রোডাকশন রেট ‘আর’(একজন রোগীর অন্যদেরকে ভাইরাস সংক্রমিত করার হার) এখন আনুমানিক ২ দশমিক ৭৬। তার মানে ১শ’ করোনাভাইরাস রোগী গড়ে ২৭৬ জনকে সংক্রমিত করছেন।