মুখোমুখি লড়াইয়ের শঙ্কা বাধিয়েও ‘আপাত স্বস্তিতে’ ট্রাম্প

ইরানের শীর্ষ এক জেনারেলকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা উসকে দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচনা কুড়ালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আপাতত ইরানের সঙ্গে বিস্তৃত যুদ্ধের শঙ্কা কাটাতে পেরেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2020, 09:16 AM
Updated : 9 Jan 2020, 09:16 AM

বুধবার ভোররাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যখন ইরাকে মার্কিন বাহিনীর আবাসস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছিল, আসন্ন বিপদের চোরা শঙ্কা তখন হোয়াইট হাউসজুড়ে ঘুরঘুর করছিল। পরিস্থিতির বিভিন্ন খুঁটিনাটি একে একে উন্মোচিত হচ্ছিল, তার মধ্যেই ট্রাম্প ও তার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভেতর-বাইরে ঝড়ের বেগে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।

কুদস বাহিনীর কমান্ডার কাসেম সোলেমানি হত্যার পাল্টায় তেহরানের ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যেকোন হতাহতের ঘটনাই পাল্টা হামলার চাপ বাড়াত; যা কয়েক বছর ধরে বাড়তে থাকা উত্তেজনাকে মুখোমুখি যুদ্ধের দিকেই নিয়ে যেত বলে ধারণা বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

বুথবার সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে যখন কথা বলছিলেন, ইরান আরও হামলা চালাতে পারে এমন উদ্বেগের মধ্যেও সম্ভাব্য সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির শঙ্কা কাটাতে পেরে ট্রাম্প তখন অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত, বলেছেন উপদেষ্টারা।

যদিও এর আগেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভাদ জারিফ সোলেমানি হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া দেখানো তেহরান ‘শেষ করেছে’ বলে জানান; প্রভাবশালী ইরাকি শিয়া নেতা মোক্তাদা আল-সদরও ‘সংকটের সমাপ্তির’ ঘোষণা দেন।

“ইরান পিছিয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে, এটা উদ্বিগ্ন সকল পক্ষের জন্যই ভালো হয়েছে, বিশ্বের জন্যও ভালো হয়েছে,” ঠাণ্ডা স্বরে বলেছেন ট্রাম্পও। কয়েকদিনের হুমকি ধামকির পর এদিন তার বিবৃতিও ছিল অনেকটাই নমনীয়। ভাষণে তিনি ইরানি হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা হামলা চালানোর প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন।

উত্তেজনা এ হারে কমতে থাকলে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংঘর্ষ বাধানোর দায় থেকে মুক্ত হয়েই নভেম্বরের নির্বাচনের প্রচারে নামতে পারবেন এ রিপাবলিকান; যিনি দীর্ঘদিন ধরেই ইরাক-আফগানিস্তানে পূর্বসুরীদের ‘অন্তহীন যুদ্ধের’ সমালোচনা করে আসছিলেন।

“ট্রাম্প খুব সুশৃঙ্খলভাবে এবং শান্তভাবে তারা (ইরান) কী প্রতিক্রিয়া দেখায় তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তার আর উত্তেজনা বাড়ানোর দরকার নেই। আমার মনে হয় ট্রাম্প সংযম দেখিয়েছেন,” বলেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক রিপাবলিকান স্পিকার নিউট গিংরিচ।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্ত সামনের সপ্তাহগুলোতেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মুখোমুখি হতে পারে; যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মনে করছেন, সম্মুখ লড়াইয়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর চেয়ে তেহরানের ঝোঁক বেশি থাকবে মধ্যপ্রাচ্যের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দিয়ে মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলা এবং সাইবার হামলার দিকেই।

ইরানের সঙ্গে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার এ নীতি ক্যাপিটল হিলের বেশিরভাগ ডেমোক্রেট, এমনকী কিছু কিছু রিপাবলিকানকেও উদ্বিগ্ন করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

“ইরানের সঙ্গে শত্রুতায় জড়ানো এবং কৌশলগত ঘাটতি নিয়ে সামনে অগ্রসর হওয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে কংগ্রেসের সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন,” বলেছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।