যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাস হওয়া এমন একটি বিলে শুক্রবার স্বাক্ষর করে বিলটিকে আইনে পরিণত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, জানিয়েছে বিবিসি।
মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞায় নর্ড স্ট্রিম টু গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণে রত কোম্পানিগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে। সাগরের নীচ দিয়ে যাওয়া এই পাইপলাইনের মধ্যমে জার্মানিতে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার কথা রয়েছে।
এই প্রকল্পটিকে ইউরোপের জন্য একটি নিরাপত্তা ঝুঁকি বলে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়া ও ইইউ, উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা করেছে।
গত সপ্তাহে প্রতিরক্ষা বিলের অংশ হিসেবে মার্কিন কংগ্রেস এই নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবটি পাস করে। প্রস্তাবে ওই পাইপলাইনটিকে ‘বলপূর্বক নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এই পাইপলাইনটির বিরুদ্ধে কেন?
প্রায় ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নর্ড স্ট্রিম টু প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রকে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। দেশটির রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট, উভয় দলীয় আইনপ্রণেতারা প্রকল্পটির বিরোধিতা করছেন।
এই পাইপলাইন ইউরোপের জ্বালানি সরবরাহের ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করে ইউরোপের লোভনীয় বাজারে আমেরিকার তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশিদারিত্বকে সঙ্কুচিত করে তুলবে, এমন আশঙ্কায় ভুগছে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার গ্যাজপ্রমের মালিকানাধীন এক হাজার ২২৫ কিলোমিটারের এই পাইপলাইন জার্মানিকে ‘রাশিয়ার জিম্মিতে’ পরিণত করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া ও ইইউ, উভয়েই ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, তাদের জ্বালানি নীতি তাদের নিজেদের ঠিক করতে দেওয়া উচিত।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেছেন, নর্ড স্ট্রিম টু প্রকল্পে বিরুদ্ধে ‘অঞ্চল বহির্ভূত কারো নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা’ করেন তিনি।
শনিবার ইইউ পরিষ্কারভাবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে কথা বলেছে।
ইইউয়ের এক মুখপাত্র বলেন, “নীতিগতভাবে বৈধ ব্যবসায় নিয়োজিত ইইউ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করে ইইউ।”
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞাগুলো ইউরোপে গৃহীত স্বায়ত্তশাসিত সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের শামিল।”
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের কঠোর বিরোধিতা করেছে। মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ওয়াশিংটনকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাধা সৃষ্টিকারী ‘চিন্তাধারা’ প্রচার করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
নর্ড স্ট্রিম টু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কনসোর্টিয়াম নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাইপলাইনটি নির্মাণ করবে।