সাংবাদিক খাশুগজি হত্যার দায় নিলেন সৌদি যুবরাজ

তুরস্কে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের দায় নিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

>>রয়টার্স
Published : 26 Sept 2019, 10:15 AM
Updated : 26 Sept 2019, 11:24 AM

মার্কিন পিবিএস টেলিভিশন নেটওয়ার্কে একটি প্রামাণ্যচিত্রে সৌদি যুবরাজ বলেছেন, গতবছর সৌদি এজেন্টদের হাতে সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যার দায় তার ওপরই বর্তায়। কারণ এ হত্যাকাণ্ড তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থাতেই সংঘটিত হয়েছে।

খাশুগজি হত্যার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১ অক্টোবরে প্রচারিত ওয়ার কথা রয়েছে ওই প্রামাণ্যচিত্রটি।

গতবছর ২ অক্টোবর দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে হত্যার শিকার হন সৌদি আরবের সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট জামাল খাশুগজি। সৌদি আরব সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন তিনি।

মোহাম্মদ বিন সালমান কখনো এ হত্যা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে মার্কিন গেয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং কিছু পশ্চিমা সরকার এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ যুবরাজই দিয়েছেন বলে তার দিকে আঙুল তুলেছিল।

রিয়াদ খাশুগজিকে হত্যার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তিনি সৌদি এজেন্টদের হাতে খুন হয়েছেন বলে স্বীকার করে। তবে যুবরাজের এতে কোনও ভূমিকা ছিল না বলেই দাবি করেছিলেন সৌদি কর্মকর্তারা। এরপরও খাশুগজি হত্যাকাণ্ড ঘিরে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সৌদি যুবরাজ। তার ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হয়। তখন থেকে তিনি আর ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেননি।

এবার এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পিবিএস চ্যানেলে মুখ খুললেন যুবরাজ। পিবিএস সাংবাদিক মার্টিন স্মিথকে তিনি বলেন, “আমার নজরদারির অধীনেই এটি ঘটেছে। এর সব দায়ই আমার।"

খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের দায় সৌদি আরব প্রথমে অস্বীকার করে পরে এর দায় চাপিয়েছিল সৌদি এজেন্টদের ওপর। বলেছিল, ওই এজেন্টদের ওপর সাংবাদিক খাশুগজিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ থাকলেও তারা বেশি বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে খুনের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। সৌদি রাজপরিবারের সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানি খাশুগজিকে নিয়ে এ মিশনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও জানা যায়।

সৌদি যুবরাজের অজান্তে এমন ঘটনা কিভাবে ঘটা সম্ভব জানতে চাইলে  বিন সালমান বলেন, "আমাদের দুই কোটি মানুষ আর ৩০ লাখ সরকারি কর্মচারি রয়েছে।” হত্যাকারীরা ব্যক্তিগতভাবে সরকারি বিমান ব্যবহার করতে পারে কিনা- সাংবাদিক স্মিথের এমন প্রশ্নের জবাবে যুবরাজ বলেন, “এসব তদারকিতে আছেন আমাদের মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। এটা তাদের দায়িত্ব। এটা করার এখতিয়ার তাদের আছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় জন্য রিয়াদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে। সৌদি আরব এ পর্যন্ত খাশুগজি হত্যার ঘটনায় ১১ কর্মকর্তাকে বিচারের মুখোমুখি করেছে। তবে বিচার প্রক্রিয়া চলছে গোপনে এবং শুনানিও হয়েছে কম।

এরই মধ্যে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে প্রিন্স মোহাম্মদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।