জনসন প্রধানমন্ত্রী হলে পদত্যাগ করবেন ব্রিটিশ চ্যান্সেলর হ্যামন্ড

বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হলে চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড পদত্যাগ করবেন বলে বিবিসি'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2019, 02:33 PM
Updated : 21 July 2019, 02:34 PM

তিনি বলেন, জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কোচ্ছেদের বিষয়ে ‘চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট’ কে বিকল্প হিসেবে রেখেছেন। “আমি এমন কিছুতে কখনোই মত দেব না।”

আগামী সপ্তাহে তিনি চাকরিচ্যুত হতে পারেন বলে মনে করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হ্যামন্ড বলেন, তাহলে তিনি আগামী বুধবারই প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র কাছে পদত্যাগপত্র দেবেন।

বিবিসি’র এন্ড্রু মার শো’তে হ্যামন্ড বলেন, “ব্রেক্সিট নীতিতে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী এবং তার চ্যান্সেলরের নিবিড় ঐক্যমত্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

অনেক চেষ্টা এবং নানা ছাড় দেওয়ার পরও ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে কোনো চুক্তি পাস করাতে ব্যর্থ হওয়ার সব দায় কাঁধে নিয়ে গত জুনে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী মে।

দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে নিয়মানুযায়ী তাকে প্রধানমন্ত্রীত্বও ছাড়তে হবে। তার দল কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতা বেছে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।

টোরি নেতৃত্বের জন্য নানা ধাপে বাছাইয়ের পর এখন লড়াইয়ে টিকে আছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।

জনসন শুরু থেকেই  বলে এসেছেন, যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই ব্রেক্সিটের নতুন সময়সীমা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইইউ ত্যাগ করতে হবে; যাই ঘটুক না কেন। ওদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হান্টও চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। তবে নতুন একটি চুক্তি করতে প্রয়োজনে ব্রেক্সিটের সময় আরো বাড়ানোর পক্ষপাতি তিনি।

আগামী মঙ্গলবার কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতার নাম ঘোষণা করবে। হ্যামন্ড বলেন, জেরেমি হান্ট কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে আসলে হয়ত ‘পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে’। “যদিও সব জরিপ জনসনের এগিয়ে থাকার পূর্বাভাসই দিয়েছে।”

“আমারও মনে হয় এটাই হবে এবং আমি সে অনুযায়ী আমার পরিকল্পনা প্রস্তুত করছি। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি মঙ্গলবার ফল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করব।”

হ্যামন্ড আরো বলেন, “জনসনের মন্ত্রিসভায় কাজ করার একটি শর্ত থাকবে, আমি সেটা বুঝতে পেরেছি। সেখানে কাজ করতে হলে সর্বশেষ সময়সীমার মধ্যে ইইউ সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, এমনকি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলেও। “এবং ওটা এমন কিছু যা আমি করতে পারব না।”

জনসন বা হান্ট কাউকে সমর্থন না করলেও হ্যামন্ড ব্রেক্সিট চান। তবে অবশ্যই সেটি নতুন একটি চুক্তির মাধ্যমে। আর নতুন চুক্তি অক্টোবর পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সম্ভব নয় বলেই তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, “সত্যিকারের একটি চুক্তির জন্য আরেকটু বেশি সময় দরকার।” চুক্তিহীন ব্রেক্সিট পরিকল্পনার বড় সমালোচনাকারীদের একজন হ্যামন্ড।

এমনকি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আটকাতে তিনি প্রয়োজনে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট ডাকারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তবে এর প্রয়োজন হবে না বলেও মনে করেন তিনি। হ্যামন্ড বলেন, “আমি নিশ্চিত, পার্লামেন্টের অনুমতি ছাড়া ৩১ অক্টোবর চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রতিরোধের পথ পার্লামেন্ট নিজেই খুঁজে নেবে।

“আমি বরং পার্লামেন্ট যেন নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে নতুন সরকারকে ওই ধরনের কিছু করা থেকে আটকাতে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে চাই।”