চীনে পাচার ঠেকাতে দক্ষিণপূর্ব এশীয় নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান

চীনে বধূ পাচার ঠেকাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থানের ‍সুযোগ বৃদ্ধি করাসহ সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে মানব-পাচার বিরোধী সংগঠনগুলো।

>>রয়টার্স
Published : 25 June 2019, 05:17 PM
Updated : 25 June 2019, 05:17 PM

বহু বছর ধরে এক সন্তান নীতির কারণে চীনে নারী-পুরষের অনুপাতে তারতম্য অনেক বেশি হয়ে যাওয়ায় সেখানে বিদেশি বধূদের চাহিদা বেড়ে গেছে। চীনে বিদেশি বধূর বাড়তে থাকা চাহিদা মানবপাচারকারীদের জন্য লোভনীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।

চীনা পুলিশ জানায়, গত বছর তারা ছয় মাসের অভিযানে ১১শ’র বেশি বিদেশি নারীকে উদ্ধার করেছে, যাদের মধ্যে প্রতিবেশী কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের নারীরাও রয়েছে।

ওই নারীদের পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৩শ ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। ভিয়েতনামী চ্যারিটি প্যাসিফিক লিংকস ফাউন্ডেশন চীন থেকে উদ্ধার পাওয়া ওই সব নারীদের নানা সহযোগিতা করে থাকে।

ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা পরিচালক মিমি ভু বলেন, বিদেশে নারী পাচার রোধ করতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সরকারকে আগে নিজেদের ঘরের সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।

“সত্যিই যদি চীনে বধূ পাচার বন্ধ করতে চান তবে আগে সংকট প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। এজন্য দেশগুলোকে আগে নিজেদের লিঙ্গ বৈষম্য এবং দারিদ্র দূর করতে হবে।”

তিনি বলেন, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের মত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোতে দালালরা সাধারণত প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে চাকরি ও উন্নত জীবনের লোভ দেখিয়ে নারীদের বড় বড় শহরে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে বিদেশে পাচার করে দেয়। আবার কেউ কেউ নিজেরাই বড় শহরে এসে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে।

কম্বোডিয়ার মানবপাচার বিরোধী একটি সংগঠনের কর্মকর্তা মাও ম্যাপ বলেন, নারী পাচার বন্ধে সরকারকে অবশ্যই পাচারকারী দলের হোতাকে ধরতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে দুর্নীতি দমন করতে হবে।

তবে শুধু মানবপাচারের বিরুদ্ধে কড়া আইন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে দুর্নীতি দমন করেই নয় বরং চীনে বধূ বিক্রি রোধে ‘ম্যারেজ ব্রোকার সার্ভিস’ বৈধ করা উচিত বলে মনে করেন মানবপাচার বিষয়ে ব্যাংকক ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ সেবাস্টিয়ান বোল।

তিনি বলেন, এখনো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক দরিদ্র দেশে নারীদের কাছে বিদেশে বিয়ে অপেক্ষাকৃত লোভনীয় বিকল্প। কারণ, তার দেশে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কম।

কিন্তু চীন ও কম্বোডিয়ার মত অনেক দেশে এখনো ‘ম্যারেজ ব্রোকার সার্ভিস’ অবৈধ। যে কারণে বিষয়টি মানবপাচারকারীদের হাতে চলে গেছে এবং বহু নারীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

“আগামী কয়েক দশক ধরে চীনে নারী-পুরুষের অনুপাতে এই ভারসাম্যহীনতা থাকবে। ফলে অন্য কোনো দেশ থেকে সঙ্গী বেছে নেওয়ার চাহিদাও থাকবে।”