মমতার সঙ্গে চিকিৎসকদের বৈঠক সরাসরি সম্প্রচার

ভারতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজ কার্যালয় নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনেই বৈঠক চলছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 12:13 PM
Updated : 17 June 2019, 12:53 PM

সোমবার বিকাল ৩টায়  ওই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতা ও টানাপড়েনের কারণে তা শুরু হতে আরো ঘণ্টাখানেক দেরি হয় বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ১২ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। সে দাবি একে একে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা।

গত ১০ জুন রাতে রাজ্যের রাজধানী কলকাতার নীলরতন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে তুলে দুই জুনিয়র চিকিৎসককে মারধর করা হয়। মৃত রোগীর প্রতিবেশী ও স্বজনরা লাঠি, ইট নিয়ে হাসপাতালে তাণ্ডব চালায়। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে পরিবহ নামের এক জুনিয়র চিকিৎসকের মাথার খুলিতে চোট লাগে।

এর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকরা ধর্মঘট শুরু করে, যা ক্রমে ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকদের টানা ছয় দিনের ধর্মঘটের কারণে রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে গত শনিবার আন্দোলনরত চিকিৎসকদের হয় তার সঙ্গে অথবা রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

মমতার ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে চিকিৎসকরা হাসপাতালে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসকদের অপমান করে দেওয়া ব্যক্তব্যের জন্য মমতাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়।

তবে রোববার নিজেদের ওই অনড় অবস্থান থেকে সরে আসেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাদের এক প্রতিনিধি বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসে যত দ্রুত সম্ভব এ অবস্থার অবসান চাই। তবে ওই আলোচনা স্বচ্ছ হতে হবে, রুদ্ধদ্বার নয়। সব কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে হতে হবে।”

সোমবার বেলা ৩টায় নবান্নে বৈঠক শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকালের দিকে তা নিয়ে আবার অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

সকালে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মৌখিকভাবে বিভিন্ন সূত্র থেকে নবান্নে বৈঠকের কথা জানতে পারলেও সরকারিভাবে কোনো আমন্ত্রণপত্র তারা হাতে পাননি। সরকারি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া তারা কোনোভাবেই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না।

সাংবাদিকদের এ কথা জানানোর কিছু পরই স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র তাদের কাছে পৌঁছায়।

ওই আমন্ত্রণপত্রে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের শর্তের উল্লেখ ছিল না। লেখা ছিল, প্রতিটা মেডিকেল কলেজ থেকে অন্তত ২ জন প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন। বেলা আড়াইটার মধ্যেই পরিচয়পত্র-সহ তাদের নবান্নে পৌঁছে যেতে হবে এবং পুরো বৈঠকটা রেকর্ড করা হবে।

কিন্তু আমন্ত্রণ পত্রে সরাসরি সম্প্রচারের কোনো উল্লেখ নেই বলে বেঁকে বসেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা না হলে বৈঠকে যাবেন না বলেও তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন।

তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়। একটি চিঠি প্রকাশ করে তা জানান এনআরএস-এর অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়।

রাজ্য সরকারের পাঠানো একটি বাসে চড়েই নবান্নে যান আন্দোলকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল। তাদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।