বৃহস্পতিবারের ব্যস্ত সময়ে পুরোপুরি অন্ধকারে ঢাকা পড়ে রাজধানী কারাকাস। অন্যান্য এলাকাগুলোতেও দেখা গেছে একই পরিস্থিতি।
দেশটির বেশিরভাগ এলাকায় যে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় সেখানে ‘নাশকতার’ কারণেই এ দুঃসহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ মাদুরো সরকারের। এর জন্য বিরোধীদেরই দায়ী করছেন মাদুরো।
পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ধসে পড়া অর্থনীতির ভেনেজুয়েলায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া এখন খুবই স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি দেশটির ৩০ লাখেরও বেশি নাগরিককে দেশ ছেড়ে পালাতেও উদ্বুদ্ধ করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, দেশটির দুর্নীতি ও বিনিয়োগ ঘাটতিই বিদ্যুৎ গ্রিডের কাজে সমস্যা তৈরি করছে। অন্যদিকে মাদুরোর দাবি, রাজনৈতিক দুস্কৃতকারীরাই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে নানা ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড করে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় রাজধানী কারাকাসসহ ভেনেজুয়েলার ২৩টি প্রদেশের ১৫টিই বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম ও টুইটার ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের একজন প্রতিবেদক একে ‘জাতীয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
“দুস্কৃতকারীরা দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার মেরুদণ্ড গুরি জলবিদ্যুৎ বাঁধের জেনারেশন ও ট্রান্সমিশন ব্যবস্থাপনায় আঘাত হেনেছে,” বলেছেন ভেনেজুয়েলার বিদ্যুৎমন্ত্রী লুইস মোটে।
নাশকতার পেছনে ‘দুস্কৃতিকারীদের’ দায়ী করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি। তবে তিন ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ ফের চালু করা হবে বলে জানান লুইস।
বিদ্যুৎ না থাকায় রাজধানীর মেট্রো চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ায় বাস সার্ভিসের ওপর চাপ বেড়ে যায় । অনেককেই বাড়ি ফিরতে কয়েক ঘণ্টা করে হাঁটতেও হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কারাকাসের প্রধান বিমানবন্দরের ফ্লাইটগুলোকেও অন্যদিকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।
মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থনে বিরোধীদলের চেষ্টায় বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল। মাদুরো স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ও বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগ করেছেন।
ওদিকে, গুইদো দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাটকে “বিশৃঙ্খলা, উদ্বেগ এবং ক্ষোভের” ব্যাপার উল্লেখ করে বলেছেন, এ ঘটনা ক্ষমতা জবরদখলকারীর অদক্ষতারই প্রমাণ। “মাদুরো একবার ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে গেলেই ভেনেজুয়েলায় আলো ফিরবে” বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও মাদুরো প্রশাসনকে অদক্ষ বলে দোষারোপ করেছেন। এক টুইটে তিনি বলেন, “কোনো খাবার নেই, ওষুধ নেই, বিদ্যুৎ নেই। এরপর মাদুরোও থাকবেন না।”