কিমকে ট্রাম্পের প্রশংসায় চটেছেন ওয়ার্মবিয়ারের বাবা-মা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের ভূয়সী প্রশংসা করায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ওটো ওয়ার্মবিয়ারের পরিবার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2019, 07:16 AM
Updated : 2 March 2019, 07:16 AM

তিন বছর আগে উত্তর কোরিয়া ভ্রমণে গিয়ে চুরির দায়ে জেল খাটা ওটো ২০১৭ সালে দেশে ফেরার কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে তার বাবা-মা সন্তান হত্যায় ফের কিম ও উত্তর কোরিয়ার নির্মম শাসনব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। বলেছেন, কোনো ধরনের ক্ষমা অথবা প্রশংসায় ওই ঘটনা বদলাবে না।

ভিয়েতনামের শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিমকে ‘স্মার্ট’অ্যাখ্যা দেওয়ার একদিন পর ফ্রেড ও সিন্ডি ওয়ার্মবিয়ার এ প্রতিক্রিয়া দেখালেন, জানিয়েছে বিবিসি।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে মতবিরোধে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনটি কোনো সমঝোতা ও চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে হ্যানয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প বলেন, “ওটোর মৃত্যুর বিষয়ে কিছুই অবগত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন তিনি (কিম); আমি তার কথা মেনে নিয়েছি।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিমকে ‘বুদ্ধিদীপ্ত’ ও ‘সত্যিকারের নেতা’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দেন।

“কেউ কেউ বলেন, আমার তাকে পছন্দ করা উচিত নয়। কেন আমি তাকে পছন্দ করব না? তার ব্যক্তিত্ব চমৎকার, তিনি স্মার্ট। যতখানি বুদ্ধিদীপ্ত হওয়া সম্ভব তিনি ততখানি, তিনি একজন সত্যিকারের নেতা ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর,” বলেছেন ট্রাম্প।

প্রেসিডেন্টের এই ভূয়সী প্রশংসা ‘আহত করে’ ওয়ার্মবিয়ারের বাবা-মাকে।

“সম্মেলনের পুরো প্রক্রিয়ায় আমরা শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। এখন আমাদের বলা উচিত।

“কিম এবং তার বর্বর শাসনব্যবস্থা আমাদের ছেলে ওটোর মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিম ও তার অশুভ শাসনব্যবস্থা অমানবিকতা ও অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী। কোনো ধরনের ক্ষমা কিংবা ভূয়সী প্রশংসা এটা বদলাতে পারবে না,” বলেছেন ফ্রেড ও সিন্ডি।

ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওটো ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া ভ্রমণে গিয়ে চুরির দায়ে ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন, যদিও ১৭ মাস পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় দেশে ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই ২২ বছর বয়সী এ মার্কিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। 

ট্রাম্প গত বছর তার স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ওটোর বাবা-মা ফ্রেড ও সিন্ডিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সেবারের ভাষণে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন।

অবশ্য তার পর থেকেই পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতি ঘটতে থাকে। জুনে সিঙ্গাপুরের সানতোসা দ্বীপে বৈঠক করে ইতিহাসও সৃষ্টি করেন ট্রাম্প-কিম। ঘোষণা দেন কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে একসঙ্গে কাজ করার।