মার্কিন কাস্টডিতে গুয়াতেমালার দ্বিতীয় শিশুর মৃত্যু

মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের পর মার্কিন সীমান্তরক্ষীদের হাতে আটক ৮ বছর বয়সী গুয়েতামালার এক শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ (সিবিপি) ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2018, 07:26 AM
Updated : 26 Dec 2018, 07:27 AM

সোমবার গভীর রাতে ছেলেটির মৃত্যু হয় বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ নিয়ে চলতি ডিসেম্বরেই সীমান্তরক্ষীদের হাতে আটক দুই শিশু মার্কিন কর্তৃপক্ষের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেল।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ৭ বছর বয়সী জ্যাকেলিন কাল নামে গুয়াতেমালা থেকে আসা আরেক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সিবিপি জানায়, সীমান্তরক্ষী এক কর্মকর্তা ৮ বছর বয়সী গুয়াতেমালার শিশুটির শরীরে অসুস্থতার লক্ষণ দেখলে সোমবার ছেলেটি ও তার বাবাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।

দুজনকেই নিউ মেক্সিকোর আলামোগোরডোর গেরাল্ড চ্যাম্পিয়ন রিজিওনাল মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শিশুটির ঠাণ্ডা ও জ্বর ধরা পড়ে। হাসপাতাল কর্মীরা পরে তাদের ছেড়ে দেন।

সন্ধ্যায় শিশুটি বমি করা শুরু করলে ফের তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, এরপর রাতেই ছেলেটি মারা যায় বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে সিবিপি।

কী কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছে তারা।

মৃত শিশু ও তার বাবার নাম পরিচয় না জানিয়ে মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, সব তথ্য পাওয়ার পর ‘উপযুক্ত সময়ে’ সেগুলো প্রকাশ করা হবে।

শিশু মৃত্যুর বিষয়টি গুয়াতেমালার কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে বলে ভাষ্য সিবিপির।

গুয়াতেমালার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্সের কনসাল কার্যালয়কে শিশুটির বাবার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। তাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য এবং সুরক্ষা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিশুটির মৃত্যু সংক্রান্ত চিকিৎসা প্রতিবেদনগুলো চাওয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছে গুয়াতেমালার মন্ত্রণালয়টি।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, ৮ বছর বয়সী শিশুটি তার বাবাকে নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর টেক্সাসের এল পাসো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। ২৩ ডিসেম্বর তাদেরকে আলামোগোরডোর সীমান্তরক্ষীদের কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়।

এর আগে ডিসেম্বরের শুরুতে সীমান্তরক্ষীদের হাতে আটক ৭ বছর বয়সী গুয়াতেমালার জ্যাকেলিন কালের মৃত্যু নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে মার্কিন প্রশাসন।

সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ঢুকে পড়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্রোত ঠেকাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অমানবিক বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ ডেমোক্রেট ও অভিবাসন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর।

মঙ্গলবার গুয়াতেমালায় কালের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ৭ বছর বয়সী এ বালিকার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।

সিবিপি জানিয়েছে, তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন দেখভালের দায়িত্বে থাকা কার্যালয় চলতি সপ্তাহে ৮ বছর বয়সী শিশুটির মৃত্যুর ঘটনাটি খতিয়ে দেখবে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মহাপরিদর্শককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

তবে গুয়াতেমালার এ দ্বিতীয় শিশটির মৃত্যুর ঘটনার কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত হবে কি না তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।