দুর্গম এলাকায় টিকা পাঠাতে ড্রোন ব্যবহার ভানুয়াতুর

ড্রোনের মাধ্যমে দুর্গম এলাকার শিশু ও নারীদের জন্য টিকা পাঠিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র ভানুয়াতু। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2018, 09:04 AM
Updated : 19 Dec 2018, 09:23 AM

ছোট এ দেশটির এক শিশুই বাণিজ্যিক ড্রোনে সরবরাহ করা টিকার প্রথম ভোক্তা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

বন্ধুর পর্বতের বাধা ডিঙিয়ে ভানুয়াতুর ওই দুর্গম অঞ্চলে টিকা পৌঁছাতে যেখানে কয়েকঘণ্টা সময় লাগত, ইউনিসেফের উদ্যোগে ড্রোন ব্যবহার করে মাত্র ২৫ মিনিটেই ওই দূরত্ব পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়।

সরবরাহ কষ্টসাধ্য হওয়ায় এতদিন দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ শিশু খুবই প্রয়োজনীয় টিকা নেওয়া থেকে বঞ্চিত হত। ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে এখন এ সমস্যা দূর হবে বলে আশা ইউনিসেফের।

জাতিসংঘের এ শিশু বিষয়ক সংস্থাটি বলছে, দুর্গম এলাকায় পৌছানোর ক্ষেত্রে ড্রোনের মাধ্যমে সরবরাহের পদ্ধতিই ভবিষ্যতে বেশি প্রাধান্য পাবে।

“ড্রোনের আজকের এই সামান্য উড়াল বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ । সব শিশুকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে বিশ্বকে এখনো সংগ্রাম করতে হচ্ছে; প্রতিটি শিশুর কাছে, একেবারে শেষ মাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে ড্রোন প্রযুক্তি সেতুবন্ধের কাজ করতে পারে, ” বলেছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েতা ফোর।

ড্রোন দিয়ে এর আগেও ওষুধ সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে। তবে দুর্গম এলাকায় টিকা পাঠাতে ভানুয়াতুই প্রথম একটি বাণিজ্যিক ড্রোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে।

প্রকল্পটির অংশীদার হতে মোট দুটি কোম্পানি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও চলতি মাসের শুরুর দিকে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে সফলতা দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সুপ অ্যারো কাজটি পায়।

এক শিশু বাণিজ্যিক ড্রোনে সরবরাহ করা টিকার প্রথম ভোক্তা হয়েছে। ছবি: ইউনিসেফ

ভানুয়াতুর পশ্চিমের ডিলন’স বে থেকে এ কোম্পানির ড্রোন বরফের প্যাক ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এমন স্টাইরোফোমের বাক্সে করে টিকাগুলো পূর্বাঞ্চলের কুক’স বে-র এরোমাঙ্গো দ্বীপের দুর্গম গ্রামে পৌঁছে দেয়।

ওষুধগুলো পৌঁছানোর পর স্থানীয় নার্স মিরিয়াম নামপালি ১৩টি শিশু ও পাঁচ গর্ভবতী নারীকে টিকা দেন।

বিবিসি বলছে, ড্রোন ছাড়া কুক’স বে-তে যাওয়ার উপায়- হয় হেঁটে, নয়তো নৌকায়। উভয় ক্ষেত্রেই সেখানকার গ্রামগুলোতে পৌঁছাতে অন্তত কয়েকঘণ্টা সময় লেগে যায়।

হেঁটে কিংবা নৌকায় করে চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে যাওয়াও বেশ ঝক্কির; তারওপর ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীকে রাখা লাগে ঠাণ্ডা তাপমাত্রায়। এসব সমস্যা ড্রোনের মাধ্যমে সহজেই সমাধান করা যাবে ভেবে উৎফুল্ল নামপালি।

“পাথুরে শৈলশিরা অতিক্রমের সময়, বৃষ্টির মধ্যে, হেঁটে নদী ও পাহাড় পেরোনোর সময় বরফের বাক্সে টিকা গুণমাণ অক্ষুণ্ণ রাখা বেশ কষ্টসাধ্য। দীর্ঘ ও কঠিন যাত্রাপথ হওয়ায় আমি মাসে কেবল একবারই শিশুদের টিকা দিতে যেতে পারতাম। কিন্তু এ ড্রোনগুলোর সাহায্যে দ্বীপের সবচেয়ে দুর্গম এলাকাতেও অনেক অনেক শিশুর কাছে পৌঁছানো যাবে,” বলেছেন তিনি।