‘সিআইএর বিশ্বাস’ যুবরাজের নির্দেশেই খাশুগজিকে হত্যা

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাশুজগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে বিশ্বাস সিআইএর।

>>রয়টার্স
Published : 17 Nov 2018, 06:54 AM
Updated : 17 Nov 2018, 07:14 AM

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইএ ঘনিষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার এ কথা জানান।

এরই মধ্যে সিআইএ এ বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন কংগ্রেসকে জানিয়ে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

সৌদি সরকারের দাবি, খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুবরাজ কিছুই জানেন না।

সর্বপ্রথম ওয়াশিংটন পোস্টে সিআইএর এই অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।

সৌদি সাংবাদিক খাশুগজি ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট ছিলেন।

ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাশুগজিকে নিয়ে ক্রাউন প্রিন্সের ভাই যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালেদ বিন সালমানের ফোনালাপ নিয়ে তদন্তের ভিত্তিতে সিআইএ তাদের মূল্যায়ন জানিয়েছে।

প্রিন্স খালেদই খাশুগজিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট থেকে তার দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি খাশুগজিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে কোনো বিপদ না হওয়ার নিশ্চয়তাও দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সিআইএর মূল্যায়নকে ‘অতিরঞ্জিত’ দাবি ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “অতিরঞ্জিত এই মূল্যায়নে যে দাবি করা হচ্ছে তা মিথ্যা।”

গত ২ অক্টোবর ব্যক্তিগত কিছু কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে যান খাশুগজি।

সেখান থেকে তিনি আর বের হননি। তার নিখোঁজ রহস্য নিয়ে ‍নানা জল্পনা-কল্পনা এবং অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর কনস্যুলেট ভবনের ভেতর তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি সরকার।

সৌদি রাজপরিবারের এক সময়ে ঘনিষ্ঠজন খাশুগজি সম্প্রতি তার কয়েকটি কলামে দেশটির রাজতন্ত্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে সৌদি সমাজ সংস্কারে যুবরাজ মোহাম্মদের গ্রহণ করা বেশ কিছু উদ্যোগের ‘প্রকৃত কারণ’ নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।

এদিকে, রিয়াদ থেকে খাশুগজিকে দেশে ফেরার জন্য বরাবরই চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি দেশে ফিরতে রাজি ছিলেন না। 

অভিযোগ আছে, মুখবন্ধ করতে সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই খাশুগজিকে হত্যা করা হয়।

অন্য দিকে রিয়াদের দাবি, খাশুগজিকে দেশে ফেরাতে জোরাজুরি করার এক পর্যায়ে ধ্বস্তাধ্বস্তি করতে গিয়ে শ্বাসরোধ হয়ে ‍তার মৃত্যু হয়।

যদিও খাশুগজির মৃতদেহ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে সৌদি আরবও কিছু বলছে না।

তুরস্ক এ হত্যাকাণ্ডকে ইচ্ছাকৃত দাবি করে সৌদি আরবের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলছে। পাশাপাশি এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক বিশ্বকে সৌদি আরবের উপর চাপ বাড়ানোর পরামর্শও দিচ্ছে।

খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৮ সৌদি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে নরহত্যার ‍অভিযোগ এনে মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন বলে বৃহস্পতিবার জানান সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর।