ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে রাজনৈতিক সংকট বাড়তে থাকার মধ্যে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন।
Published : 09 Jul 2018, 09:03 PM
ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিস ডেভিসের পদত্যাগের পর তিনিই হচ্ছেন মন্ত্রিসভার পদত্যাগ করা দ্বিতীয় ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট) নিয়ে টেরিজা মে’র পরিকল্পনার বিরোধিতা করেই পদত্যাগ করেছিলেন ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিস। বরিস জনসনও একই সূত্র ধরে সোমবার পদত্যাগ করলেন।
টেরিজা মে পার্লামেন্টে তার নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে ভাষণ শুরুর কিছুক্ষণ আগে জনসন পদত্যাগ করেন। তার এ পরিকল্পনা নিয়ে বহু কনজারভেটিভ এমপি’ই ক্ষুব্ধ।
মে’র মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে বরিস জনসনের পদত্যাগপত্র সোমবার বিকালে গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। জনসনের কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”
একইদিনে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের ফলে অর্ধদশকের মধ্যে ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক এবং বাণিজ্য নীতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ঐক্য ধরে রাখায় সরকারের ব্যর্থতাই প্রকাশ পেল।
বিবিসি’র রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুয়েনসবার্গ বলেছেন, বরিস জনসনের পদত্যাগ সংকটে জর্জরিত প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি ‘বিব্রতকর এবং জটিল পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, জনসন কোনো সাধারণ মন্ত্রী ছিলেন না। কারণ, ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট প্রশ্নে গণভোটে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে প্রচারের নেতৃত্বে ছিলেন জনসন। তাই তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টি হবে।
প্রধানমন্ত্রী এখন এ কঠিন সময় সাহসের সঙ্গে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে তার ‘বাণিজ্যবান্ধব’ ব্রেক্সিট নীতি চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর থাকবেন নাকি আরো মন্ত্রীর পদত্যাগ কিংবা নিজেরই পদত্যাগের দাবি ওঠার মুখে পড়বেন সেটিই প্রশ্ন।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চে ইইউ ছাড়ার কথা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। কিন্তু এরপর যুক্তরাজ্য এবং ইইউ এর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক কিরকম থাকবে সে ব্যাপারেই এখনো আলোচনায় সমঝোতা হওয়া বাকি।
মন্ত্রিসভায় চরম বিভাজনের মধ্যেও মে শুক্রবার ইইউ’র সঙ্গে যতটা সম্ভব নিবিড় বাণিজ্য সম্পর্ক রাখার পরিকল্পনা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনেক কষ্টে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে সক্ষম হন। তবে পরিকল্পনাটি নিয়ে মন্ত্রীদের মধ্যে মতভেদ ছিল। ব্রেক্সিটমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্রে এ পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
ইইউ বিরোধী অনেকেই এ পরিকল্পনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যে কৌশল নিয়ে সমঝোতা হয়েছে তাতে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিষ্কারভাবে ছাড়তে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।
ইইউ বিরোধীদের এ অবস্থানের কারণে তাদের কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রী মে’ কে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করতে পারেন এমন সম্ভাবনাও জোরাল হচ্ছে।