ইরানে অস্থিরতা উস্কে দিয়েছে শত্রুরা: খামেনি

শত্রুরা ইরানে অস্থিরতা উস্কে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2018, 01:08 PM
Updated : 2 Jan 2018, 01:08 PM

গত সপ্তাহ থেকে চলমান বিক্ষোভ সরকার কঠোরভাবে দমনের উদ্যোগ নেওয়ার পর খামেনি এই প্রথম দেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বললেন।

অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও দুর্নীতির অভিযোগে সৃষ্ট অসন্তোষ থেকে গত বৃহস্পতিবার ইরানের দ্বিতীয় জনবহুল শহর মাশহাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। যা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের রূপ নিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

তেহরানে পুলিশ গত তিন দিনে ৪৫০ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ স্টেশনগুলোতেও হামলা করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

খামেনি তার কার্যালয়ের ওয়েব সাইটে এক পোস্টে বলেন, “সম্প্রতি ইরানের শত্রুরা এখানে সমস্যার সৃষ্টি করতে অস্ত্র, রাজনীতি, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেছে।”

‘সঠিক সময় আসলে’ এ বিষয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন বলেও জানান তিনি।

খামেনি কোনো শত্রুর নাম করেন নি। তবে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি আলি শামখানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং সৌদি আরব ইরানে সাম্প্রতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামার পেছনে কলকাঠি নাড়ছে।

বৈরুত-ভিত্তিক আল মায়াদীন টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শামখানির উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানের তাসনিম নিউজ বলেছে, “ইরানের কাছ থেকে সৌদি আরব এমন জবাব পাবে যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। এটি কত মারাত্মক হতে পারে তা তারা জানে।”

ইরানে টানা পাঁচ দিনের বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর মধ্যে শনিবার দুইজন ও রোববার অন্তত ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

সোমবার দিবাগত রাতে নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রতিবাদকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে আরো নয়জন নিহত হয়েছে।

এই রাতে প্রতিবাদকারীরা কয়েকটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিগুলোতে দেখা গেছে, মধ্যাঞ্চলীয় শহর কাহদেরিজানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হচ্ছে। প্রতিবাদকারীরা একটি পুলিশ স্টেশনের দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং স্টেশনটির একটি অংশে আগুন জ্বলছে।

পুলিশ স্টেশনটি থেকে অস্ত্র লুটের চেষ্টাকালে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

অন্য একটি এলাকায় ইরানের বিপ্লবী রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১ বছরের এক বালক এবং আরও এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাতের সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে রয়টার্স।

প্রাদেশিক ডেপুটি গভর্নর-জেনারেল আলি আসগর নাসেরবখত বলেন, সোমবার পর্যন্ত তেহরান প্রদেশ থেকে প্রায় সাড়ে চারশ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “শনিবার প্রায় দুইশ জনকে, রোববার দেড়শজনকে এবং সোমাবার প্রায় একশ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি চলমান বিক্ষোভ সম্পর্কে বলেছিলেন, ইরানের নাগরিকদের ‘বিক্ষোভের অধিকার আছে কিন্তু দেশের সম্পদ বিনষ্ট এবং আইনশৃঙ্খলা ভাঙ্গার অধিকার নেই’।

তার আগে আইন ভঙ্গ করলে বিক্ষোভকারীদের চড়া মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছিলেন ইরান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দলরেজা রহমানি ফাজলি।