উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বে শিগেনাগা টোমিওকা নামের এক ব্যক্তি তার বোন ও অন্য এক নারীকে ‘সামুরাই তলোয়ার’ দিয়ে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে।
টোমিওকা হাচিমাংয়ু মঠের প্রধান পুরোহিত ছিলেন শিগেনাগার বোন নাগাকো।
৫৮ বছর বয়সী এই নারী নিজের গাড়ি থেকে নামার পর তলোয়ার হাতে ভাইয়ের হামলার শিকার হন বলে কিয়োদো নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নাম না জানা ৩০ বছর বয়সী নিহত অন্য নারীও নাগাকোর ওপর হামলায় জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আত্মহত্যার আগে শিগেনাগা তাকেও হত্যা করেন।
৫৬ বছর বয়সী শিগেনাগার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাননি নাগাকোর গাড়ির ড্রাইভারও।
পুলিশ বলছে, বুকে ও কাঁধে তলোয়ারের আঘাত থাকলেও ড্রাইভার প্রাণে বেঁচে যাবেন।
ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত সামুরাই তলোয়ারটি উদ্ধার করা হয়েছে।
শিনটো ধর্মের পৌরহিত্য করা নিয়ে দুই ভাইবোনের মধ্যে অনেকদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে শিগেনাগাই ছিলেন টোমিওকা মঠের প্রধান পুরোহিত।
২০০১ সালে শিগেনাগাকে বরখাস্ত করে তার বাবা ফের প্রধান পুরোহিত হন; মঠের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ দেওয়া হয় নাগাকো টোমিওকাকে।
এরপরই গোষ্ঠীটির মধ্যে দ্বন্দ্ব তুমুল আকার ধারণ করে। নাগাকোকে হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকদফা চিঠি দেওয়ার কারণে ২০০৬ সালে শিগেনাগাকে গ্রেপ্তারও করেছিল পুলিশ।
২০১০ সালে বাবার অবসরের পর তার উত্তরসূরী হিসেবে নাগাকোর মনোনয়ন নিয়ে শিনটো গোষ্ঠী বিভক্ত হয়ে পড়ে, যার চূড়ান্ত রূপ হিসেবে দুই ভাইবোনের এ মৃত্যুর ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিনটোবাদ জাপানের প্রাচীন ধর্মগুলোর একটি; হাচিমাংয়ু মঠটি ১৬২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবছর অগাস্টে ফুকাগাওয়া হাচিমান সামার ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের জন্য মঠটি বিখ্যাত।
পর্যটক ও দাতাদের আকৃষ্ট করতে এডোতে (এখনকার টোকিও) যারা সুমো কুস্তির আয়োজন করতো তাদের মধ্যে শিনটো অনুসারীরাও ছিল বলে সম্প্রদায়টির ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে।
সুমো কুস্তির ওই প্রথা শিনটোর মঠগুলোতে এখনো প্রচলিত।