উ.কোরিয়া থেকে মুক্ত মার্কিন ছাত্র ওয়ার্মবিয়ারের মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত

উত্তর কোরিয়া থেকে ১৭ মাস পর মুক্তি পাওয়া মার্কিন শিক্ষার্থী ওটো ওয়ার্মবিয়ারের মস্তিষ্কের কোষ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2017, 06:48 AM
Updated : 16 June 2017, 09:54 AM

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য পৌঁছান ২২ বছরের তরুণ ওয়ার্মবিয়ার।

ইউনির্ভারসিটি অব সিনসিনাটি মেডিকেল সেন্টারের নিউরোসায়েন্স ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগের পরিচালক ডা. ড্যানিয়েল কানটার বলেন, “ওয়ার্মবিয়ারের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। কিন্তু সে কোনো কিছুতে সাড়া দিচ্ছে না। সে কথা বলছে না বা সে কথা বুঝতে পারছে না। এমনকি চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কও সে সজাগ নয়।”

২০১৬ সালের মার্চে উত্তর কোরিয়ার একটি আদালত রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধে ওয়ার্মবিয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়।

ওই বছর জানুয়ারিতে (সরকার বিরোধী) প্রপাগান্ডা স্লোগান বহনকারী কাগজপত্র চুরির চেষ্টার অভিযোগে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়ার্মবিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

ওহাইওর বাসিন্দা তার পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ওয়ার্মবিয়ারকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পরপরই সে কোমায় চলে গিয়েছিল।

উত্তর কোরিয়ায় ওয়ার্মবিয়ার বর্বরোচিত নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও দাবি করে তার পরিবার।

ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ওয়ার্মবিয়ার একটি পর্যটক দলের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন।

…যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর একটি বিমানবন্দরে একটি এয়ারঅ্যাম্বুলেন্স থেকে ওটো ওয়ার্মবিয়ারকে নামানো হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

‘মানবিক কারণে ওয়ার্মবিয়ারকে মুক্তি দেওয়া হয়’ বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া কর্তৃপক্ষ।

উত্তর কোরিয়া থেকে বলা হয়,  খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে ওয়ার্মবিয়ার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে একটি ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তারপরই সে কোমায় চলে যায়।

কিন্তু ওয়ার্মবিয়ারের শরীরে খাদ্যবিষক্রিয়ার কোনো লক্ষণ নেই বলে বৃহস্পতিবার জানান তার চিকিৎসকরা।

কানটার বলেন, “ওয়ার্মবিয়ারের মস্তিষ্কের সব দিকের কোষই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ওয়ার্মবিয়ারের পরিবারের অনুরোধে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তবে ঠিক কি কারণে ওয়ার্মবিয়ারের এ অবস্থা হয়েছে সে বিষয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

সাধারণত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে মস্কিষ্কের কোষে এ ধরণের ক্ষতি হয় বলে মত চিকিৎসকদের।

উত্তর কোরিয়ার অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তার চিকিৎসায় কি ধরণের ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে যে বিষয়েও চিকিৎসকরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

উত্তর কোরিয়া থেকে ২০১৬ সালের এপ্রিলে ওয়ার্মবিয়ারের এমআরআই এর একটি ‘ইমেজ’ যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান কানটার।

ওয়ার্মবিয়ারের শরীরের কোনো হাড় ভাঙ্গার লক্ষণও নেই বলে জানান চিকিৎসকরা।

গত মঙ্গলবার ওয়ার্মবিয়ারের মুক্তির খবর দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।