কুকুর, ঘোড়ার সঙ্গে মানুষের সখ্যতার সম্পর্ক বহু পুরনো হলেও সারসের সঙ্গে সখ্যতার কথা তেমন শোনা যায়নি, কিন্তু ভারতের উত্তর প্রদেশে এরকমই চমক জাগানিয়া এক ঘটনা ঘটেছে।
ছোট একটি মানবিক কাজের মাধ্যমে অবিচল এক বন্ধু পেয়েছেন মোহাম্মদ আরিফ (৩০), জানিয়েছে বিবিসি।
ঘটনা এক বছর আগের। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমেথির বাড়ি থেকে এক-দেড়শ মিটার দূরে নিজেদের ক্ষেতে গিয়ে আরিফ এক আহত সারসকে পান। সারসটির পা ভেঙে গিয়েছিল, সেখান থেকে রক্ত ঝরছিল।
আরিফ সারসটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে ও যত্ন নিয়ে সারসটিকে সারিয়ে তোলেন। দেড় মাস পর সারসটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে, নিজের পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়াতে শুরু করে।
সুস্থ হওয়ার পর সারসটি প্রকৃতিতে ফিরে যাবে, আরিফ এমনটিই ভেবেছিলেন। কিন্তু সারটি তাকে ছেড়ে যায়নি, তার সঙ্গে সঙ্গেই থাকতে শুরু করে। এভাবে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ উষ্ণ একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
“দিনের বেলা যখন কাজে চলে যাই, সারসটি আশপাশে ঘুরে বেড়ায়, অন্যান্য পাখিদের সঙ্গে মেশে। কিন্তু যখন সন্ধ্যায় আমি ফিরে আসি সারসটি আমার কাছে চলে আসে, আমাকে আলিঙ্গন করে আর আমরা একসঙ্গে রাতের খাবার খাই,” বলেন আরিফ।
সারসটি খুব কম সময়ই আরিফকে ছাড়া থাকে। আরিফ মোটরসাইকেলে করে চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরে যান, সারসটিও তার পেছন পেছন উড়ে যায়। এভাবে আবার তারা ফিরে আসেন।
আরিফের সঙ্গে তার থালা থেকেই খাবার খায় সারসটি। তার সঙ্গে ক্ষেতে, মাঠে গিয়ে ঘুরে। একটি স্টিলের গ্লাসে সারসটিকে পানি খাওয়ান আরিফ।
আরিফ জানান, তারা কখনো সারসটিকে আটকে রাখেননি; সে তার ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়িয়েছে এবং এখনও সেভাবেই আছে।
“কোনো কোনো দিন এটি উড়ে দূরে চলে যায়, কিন্তু সবসময়ই সূর্যাস্তের পর ফিরে আসে। বন্ধুত্ব স্বাধীনতার মাধ্যমে বিকশিত হয়,” বলেন আরিফ।