চীনে জন্মহার বাড়াতে নতুন কৌশল প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
Published : 16 Oct 2022, 07:17 PM
দ্রুতগতিতে কমছে জন্মহার। যা ভবিষ্যতে চীনের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নীতি-নির্ধারকরা। জন্মহার বাড়াতে তাই নতুন কৌশল প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বেইজিংয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির চলমান সম্মেলনে শি রোববার তার ভাষণে এ কথা বলেন।
শি বলেন, ‘‘আমরা জন্মহার বাড়াতে একটি নীতি নির্ধারণ এবং মোট জনসংখ্যা ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে একটি সক্রিয় জাতীয় কৌশল অনুসরণ করব।”
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনে ১৪০ কোটির বেশি মানুষের বসবাস করে। যা দেশটিকে সর্ববৃহৎ জনসংখ্যার দেশে পরিণত করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চীন ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কঠোর এক সন্তান নীতি মেনে চলেছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে জন্মহার নিম্নগামী। এ অবস্থায় দেশটি কঠোর এক সন্তান নীতি থেকে সরে এসে তিন সন্তান নীতি গ্রহণ করেছে। যদিও তাতে কাজের কাজ তেমন হয়নি। দেশটিতে ২০২১ সালে জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে।
জনসংখ্যাবিদরা জানান, ২০২০ সালেও যেখানে দেশটিতে এক কোটি ৬০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছিল সেখানে ২০২১ সালে এক কোটির কম শিশুর জন্ম হয়েছে। ২০২০ সালের তুলনায় যা ১১ দশমিক ৫ শতাংশ কম।
২০২১ সালে চীনে ফার্টিলিটি রেট ছিল ১ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা ওই বছর বিশ্বে সর্বনিম্ন। ওইসিডি-র স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ফার্টিলিটি রেট ২ দশমিক ১ শতাংশ থাকলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকে।
দম্পতিদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে চীন সরকার গত বছরের কিছু আগে থেকেই কর কর্তন, দীর্ঘ মাতৃত্বকালীন ছুটি, উন্নত চিকিৎসা বীমা, আবাসন ভর্তুকি, তৃতীয় সন্তানের জন্য অতিরিক্ত অর্থ এবং ব্যয়বহুল প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তারপরও চীনা নারীদের মধ্যে এখন সন্তান জন্মদানের ইচ্ছা বিশ্বে সবচেয়ে কম বলে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি জরিপে দেখা গেছে।
জনসংখ্যাবিদরা বলছেন, সরকার এখন পর্যন্ত যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা পর্যাপ্ত নয়। নগরীতে শিক্ষাখাতে উচ্চ ব্যয়, নিম্ন আয় এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টার মত বিষয়গুলো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সমাধান করতে হবে।
এরসঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারী এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেটাও নিম্ন জন্মহারে ভূমিকা রাখছে বলে মত তাদের।