জরিপে অংশ নেওয়া ৮৩ শতাংশ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উচিত দ্বিমত থাকলেও ফেডারেল আদালতের রায় মান্য করা।
Published : 22 Apr 2025, 03:54 PM
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা বিস্তারের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জনমনে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে আর এটি তার জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের পরিচালিত এক যৌথ জরিপে আভাস পাওয়া গেছে।
ছয়দিনব্যাপী চালানো ওই জরিপ সোমবার শেষ হয়। ১৬ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলা এ জরিপে ৪৩০৬ জন পূর্ণবয়স্ক আমেরিকান অংশ নেন।
তাদের মধ্যে ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা ট্রাম্পের কার্যক্রমে সমর্থন জানিয়েছে। তিন সপ্তাহ আগে এ হার ছিল ৪৩ শতাংশ আর ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে এই হার ৪৭ শতাংশ ছিল।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের শুরু থেকেই একের পর এক নির্বাহী আদেশ দিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আইনি প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত নিজের প্রভাব বাড়িয়েছেন ট্রাম্প। এতে তার রাজনৈতিক বিরোধীরা হতবাক হয়েছে আর সসাধারণ জনগণের একাংশের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৮৩ শতাংশ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উচিত ফেডারেল আদালতের রায় মান্য করা, এমনকি যদি তিনি নিজে তা নাও চান।
রয়টার্স লিখেছে, ভেনেজুয়েলার একটি গ্যাংয়ের সন্দেহভাজন সদস্যদের আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা আদালত অবমাননার মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প দাবি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় ব্যর্থ। তাই তিনি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেছেন, যার মধ্যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ২ বিলিয়ন ডলারও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ধরন নিয়ে দ্বিমত থাকায় প্রেসিডেন্টের তহবিল বন্ধ রেখে ঠিক করেছেন, এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন ৫৭ শতাংশ আমেরিকান। এই সংখ্যার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান সমর্থকও রয়েছেন।
৬৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, জাতীয় জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রেসিডেন্টের হাতে থাকা উচিত নয়।
যেমন, গত মাসেই ট্রাম্প স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনকে 'অনুপযুক্ত' মতাদর্শ দূর করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। এই বিশাল জাদুঘর ও গবেষণা কমপ্লেক্সটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি প্রধান প্রদর্শনী স্থান।
মুদ্রাস্ফীতি, অভিবাসন, করনীতি ও আইনের শাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ট্রাম্পের কার্যক্রমে যারা অসন্তুষ্ট, তাদের সংখ্যা প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমর্থকদের তুলনায় বেশি, জরিপে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেলেও সেখানে ৪৬ শতাংশ তার কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট।
জরিপে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ, যাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
ট্রাম্প তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও সংবিধান অনুযায়ী তা নিষিদ্ধ। জরিপে ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তার তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করা উচিত নয়। এমনকি ৫৩ শতাংশ রিপাবলিকান অংশগ্রহণকারীও এ বিষয়ে একমত।